‘নির্বাচন ও রাজনীতির বিশ্বাস-অবিশ্বাস’ শীর্ষক এক টকশোতে অংশ নিয়ে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ‘সংস্কার’ প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মত দিয়েছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মওদুদ আলমগীর পাভেল এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স।
দুই নেতাই বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় ‘সংস্কার’ শব্দটি জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। একদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দফায় দফায় বৈঠক, অন্যদিকে প্রশ্ন— কে কোন সংস্কারকে মানছে, আর কে মানছে না।
বাস্তববাদ ও মতানৈক্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার দরকার, তা করেই নির্বাচন দিতে হবে। তবে মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তন চাইলে তা আলাদা ইশতেহার দিয়ে করা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “৯০টি দল যদি কোনো বিষয়ে একমত হয়, সেটাকেই জাতীয় ঐকমত্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। অন্যরা বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে নির্বাচনে যাবে, জনগণ রায় দেবে।”
৭০ অনুচ্ছেদ ও বিএনপির শর্ত আলোচনায় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়েও বিতর্ক ওঠে। অধিকাংশ দল সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ চাইলেও বিএনপি শর্ত দেয়— তারা বিষয়টি ইশতেহারে রাখবে এবং জনগণের রায় পেলে বাস্তবায়ন করবে।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী চায়, ঐকমত্যহীন বিষয়গুলো গণভোটে নিষ্পত্তি হোক, তবে রুহিন হোসেন প্রিন্স একে “বাস্তবভিত্তিক নয়” বলে উড়িয়ে দেন।
বিএনপি ও এনসিপির অবস্থান অধ্যাপক মওদুদ আলমগীর বলেন, “আমরা জুলাই সনদের পক্ষে, তবে শুধু গুরুত্বহীন বিষয়ে ঐকমত্যের কোনো মানে নেই। মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানেই ফাঁকা কাঠামো।”
বিএনপি বারবার তাদের ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে এবং বলছে, এসব বাস্তবায়ন না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
উপসংহার সব মিলিয়ে, রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সংস্কার বনাম নির্বাচন’ বিতর্কে একপক্ষ বলছে নির্বাচন আগে, অন্যপক্ষ বলছে আগে সংস্কার। আর কেউ কেউ বলছে, যতটুকু ঐকমত্য গড়ে ওঠে— সেটাকে ভিত্তি করে সামনে এগোনোই হবে জনগণের জন্য বাস্তব সমাধান।