সখীপুর প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইরি-বোরো ধানকাটা কৃষি শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
বাম্পার ফলন হলেও একমণ ধানের দামে মিলছে না একজন ধানকাটা শ্রমিক।
বর্তমানে জনপ্রতি শ্রমিক মজুরি দিতে হচ্ছে তিন বেলা খাবারসহ দৈনিক এক হাজার টাকা। সাথে দিতে হচ্ছে পান-বিড়ি, সিগারেটও; এতে জনপ্রতি শ্রমিকের মজুরি পড়ছে প্রায় ১১শ’ টাকা।
এদিকে বাজারে একমণ ধান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। ফলে একমণ ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের মজুরি দিতে না পারায় মহাবিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
কৃষকদের বক্তব্য –
সখীপুর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী, আরিফ হোসেন, ফরমান আলীসহ বেশ কয়েজন কৃষক জানান, বোরো চাষে জমি প্রস্তুত, চারা রোপণ, সেচ, সার-কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, ধানকাটা শ্রমিক খরচসহ প্রতিমণ ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে প্রায় ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা।
আবার এখন ধানকাটা শ্রমিক সংকটের কারণে উচ্চ মজুরি পরিশোধ করতে হচ্ছে।
শ্রমিক সংকটের কারণে মাঠের পাকাধান কেটে উঠাতে পারছেন না কৃষকরা। কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টি, ঝড়-তুফানের আগে ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা থাকলেও শ্রমিক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে তা।
কুতুবপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, ৪ একর জমির পাকা ধান মাঠে পড়ে রয়েছে; শ্রমিকের অভাবে কাটতে পারছি না;’ আকাশে মেঘ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন কৃষকরা।
ফলে চড়া মূল্যে শ্রমিক নিয়ে ধানকাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
শ্রমিক সংকটের কারণ হিসেবে স্থানীয়রা জানান, বেশিরভাগ শ্রমিক পেশা বদল করে রিকশা-ভ্যান, ভটভটি, ইজিবাইক, নছিমন, করিমন, আবার অনেকেই অটোরিকশা সিএনজি চালাচ্ছে।
উপজেলার কুতুবপুর থেকে ধানকাটার শ্রমিক নিতে আসা আনোয়ার পাশা বলেন, শ্রমিকের মজুরি বেশি। এ দামে ধান কেটে পোষাবে না। তবু ধান তো আর মাঠে রাখা যাবে না। বাধ্য হয়ে শ্রমিক নিতে হচ্ছে।
কৃষক আতোয়ার হোসেন বলেন, ‘অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও ধান কাটার জন্য শ্রমিক নিতে পারলাম না; মজুরি বেশি হওয়ায় আজ ফিরে যাচ্ছি।’ একই ধরনের কথা বলেন বেতুয়া গ্রামের শাহাদত হোসেন ও বহেড়াতৈল গ্রামের শামীম হোসেন।
কৃষি কর্মকর্তা যা বললেন –
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মণ বলেন, কৃষকরা হতাশায় থাকলেও দু-তিনদিনের মধ্যে শ্রমিক সংকট কমে যাবে। ঈদের কারণে শ্রমিকের দাম বেড়েছে।
উপজেলায় ৭টি ধান কাটার কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। মেশিনগুলাে সল্প মূল্যে কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছে।
আরো শ্রমিক সংকট দেখা দিলে অন্যান্য উপজেলার সাথে যােগাযােগ করে শ্রমিক সংকট দূর করার চেষ্টা করব। সম্পাদনা – অলক কুমার