টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার করটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাঁকড়ার ঝোড়া এলাকায় বংশাই নদীর শাখা টুঙ্গি নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি ব্রিজের কাজ দীর্ঘ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই ব্রিজটির কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে।
জানা গেছে, কালিদাস-বহুরিয়া সড়কের করটিয়াপাড়া বাজার সংলগ্ন কাঁকড়ার ঝোড়া এলাকায় ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে থেমে থেমে চলছে। অল্প কিছুদিন কাজ চলার পর দীর্ঘ সময় কাজ বন্ধ থাকায় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে আছে। ফলে ব্রিজের দুই পাড়ের হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন উপজেলা শহর কিংবা আশপাশের এলাকায় যাতায়াত করতে হলে তাদের ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটিই বেশি ব্যয় হচ্ছে। বিশেষ করে বহুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী ও সেবাপ্রত্যাশীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বয়স্ক মানুষ, নারী ও শিশুদের নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে নানাভাবে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।
সখীপুর উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাইন উদ্দিনবাসী। এলজিইডির নথি অনুযায়ী এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে গত কয়েক মাস ধরে কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান,
ব্রিজটি অসম্পূর্ণ থাকায় কালিদাস, ঠকাইনাপাড়া, ফুলঝুড়িপাড়া, করটিয়াপাড়া, বেলতলী, হারিঙ্গাচালা, হতেয়া-রাজাবাড়ি, কালমেঘা, ছলংগা ও বহুরিয়া চতলবাইদসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০ গ্রামের মানুষ মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে পারছে না। অসুস্থ রোগীদের কাঁধে করে কিংবা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার করতে হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলেন, ফল-ফসল ও শাকসবজি পরিবহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ছোটখাটো মালামাল মাথায় বা কাঁধে করে পার করতে হচ্ছে। সাময়িক যাতায়াতের জন্য এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। দ্রুত ব্রিজের কাজ শেষ করার জন্য তারা সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, ব্রিজটির অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিছু জটিলতার কারণে কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও খুব শিগগিরই পুনরায় কাজ শুরু হবে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।











