টাঙ্গাইলের কালিহাতীর শোলাকুড়ি বাজারে সালিশ করতে গিয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক, সহদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ বারের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীরমুক্তিযোদ্ধা শুকুর মাহমুদ আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরো অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে শুরু করে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা, মারামারি ও ভাঙচুর চলে।
কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নের মুলিয়া, সারাইল ও সহদেবপুর তিন গ্রামের মানুষের মধ্যে এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দুই গ্রামের বাসিন্দারা জানান, কয়েকদিন আগে একটি ওয়াজ মাহফিলে সাকরাইল ও মুলিয়া গ্রামের ছেলেদের মধ্যে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার মিমাংসার জন্য শোলাকুড়ি বাজারে একটি সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশে সহদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ বারের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শুকুর মাহমুদ, মকদুম মাস্টার, জনাব আলীসহ বেশ কয়েকজন মাতব্বর উপস্থিত হন। সে সময় দুই গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে মারামারি শুরু করে। এক পর্যায়ে মুলিয়া গ্রামের সাথে যোগ দেন সহদেবপুর গ্রামে লোকজন। পরে উভয় পক্ষ শোলাকুড়ি বাজারে অবস্থিত অপর পক্ষের অন্তত ১৫/২০টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা।
খবর পেয়ে কালিহাতী থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় ২ ঘন্টা সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এলাকায় পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শুকুর মাহমুদ বলেন –
এবিষয়ে সহদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ বারের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শুকুর মাহমুদ বলেন, দুই গ্রামের ছেলেদের মধ্যে একটি ঝগড়া হইছে। আমাকে মুলিয়া গ্রামে তারা নিয়ে আসছে যে, আমরা একটু বসে মিটমাট করবো, আপনি একটু থাকেন, থেকে মিটিয়ে দেন। সেই উদ্দেশ্যে আমি আসছি। আসার এক পর্যায়ে দেখলাম, সাকরাইল গ্রামের কয়েকজন ছেলে আইসা উত্তেজিত কথাবার্তা শুরু করলো, সে সময় মুলিয়া গ্রামের ছেলেপেলেরাও উত্তেজিত হয়ে গেল। এসময় একটি ইটের টুকরার ঢেল আমার মাথায় এসে লাগে। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, যেভাবে ঢিলটা দিয়েছে, তাতে আমার মনে হয়, কোন না কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ঢিলটা দিয়েছে।
পুলিশ যা বলল –
এই ঘটনা প্রসঙ্গে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ১২টার দিকে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু এক পক্ষকে নিবৃত্ত করলে অপর পক্ষ এগিয়ে আসে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়। পরে সেনা বাহিনীও ঘটনাস্থলে আসে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।