বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে পানির তোড়ে বন থেকে ভেসে গিয়ে এখন পর্যন্ত দুটি মৃত এবং একটি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বনের অভ্যন্তরে খনন করা পাঁচটি মিষ্টি পানির পুকুরেও ঢুকে পড়েছে লবণ পানি, যা বন্যপ্রাণী ও বন বিভাগের স্টাফদের পানির উৎসকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে বন বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান,
“জলোচ্ছ্বাসে কটকা, করমজল, দুবলারচর, ভোলা এবং সুপতি এলাকায় পাঁচটি মিষ্টি পানির পুকুরে লবণ পানি ঢুকে পড়েছে। এতে বন্যপ্রাণীদের পানির উৎস নষ্ট হয়ে গেছে।”
তিনি আরও জানান,
“শনিবার সকালে দুবলার মাঝেরচর এলাকা থেকে মৃত একটি হরিণ উদ্ধার করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি মৃত এবং একটি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। সবগুলো হরিণই জলোচ্ছ্বাসের সময় সুন্দরবন থেকে ভেসে গিয়েছিল।”
সুন্দরবনে বর্তমানে ৫০টির বেশি মিষ্টি পানির পুকুর রয়েছে, যেগুলো বন্যপ্রাণী এবং বন স্টাফদের ব্যবহারের জন্য খনন করা হয়েছিল।
এদিকে, বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের খুড়িয়াখালী-বগী ভারানী খালের পাশে রিং বাঁধের প্রায় ৩০০ ফুট অংশ ভেঙে গেছে। এতে করে জোয়ারের পানিতে শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন,
“পানির প্রবাহ বেশি থাকায় বাঁধ ভেঙেছে। ভাটার সময় পানি নেমে গেছে। বাঁধ পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে।”
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান জানান,
“জেলার কোথাও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সতর্কতার অংশ হিসেবে প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছে।”
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, এখন পর্যন্ত কোনো মৎস্য ঘের ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি, তবে তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন থেকে ভেসে যাওয়া অবস্থায় ১৮টি জীবিত ও ১৩৪টি মৃত হরিণ উদ্ধার করেছিল বন বিভাগ। এছাড়া লবণ পানি ঢুকে পড়ায় ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।