মানহানীর অভিযোগে করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম উর্মি বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহের আদালত অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি আদালতে হাজির হন। এ সময় তার আইনজীবী পি এম মাহাদী হাসান অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, আসামি মামলার কথিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তার বিরুদ্ধে মামলার কথিত ঘটনা মিথ্যা। আসামি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
আসামি সেই সময়ে পারিপার্শ্বিক ঘটনা সম্পর্কে ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী নিজেস্ব অভিমত প্রকাশ করেছেন। সেই পোস্টে বাদীর সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কিত নয়। দণ্ডবিধির ৪৯৯/৫০০ ধারার বিধানে মানহানির ক্ষেত্রে যেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে সেই ব্যক্তি নিজে এবং মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তার বাবা, মা অথবা নিকটাত্মীয় এই মানহানির মামলা করতে পারেন। এই মামলার বাদী শহিদ আবু সাইদের বা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের রক্ত সম্পর্কিত কেউ নন। বাদীর দায়ের করা অভিযোগ করার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই বিধায় আসামি অব্যাহতি পাওয়ার হকদার বটে।
এ সময় বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, আসামি ইচ্ছাকৃতভাবে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই তিনি ফেসবুকে এই মানহানিকর পোস্ট দিয়েছেন। এ মামলার বাদী সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নেন ও ১১ দিন জেল হাজতে ছিলেন। তাই এই মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে আইনগত বাধা ছিল না।
এ মামলায়
অভিযোগ গঠনের যথেষ্ট উপাদান রয়েছে। তাই অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদসহ অন্য শহীদদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলার আবেদন করেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড এবং পর্যালোচনা শেষে ২৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। ওইদিন তিনি আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচশো টাকা মুচলেকায় তার জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় মামলাটি বদলি করা হয়।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদসহ অন্য শহিদদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলার আবেদন করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড এবং পর্যালোচনা শেষে ২৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। ওই দিন তিনি আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ শ টাকা মুচলেকায় তার জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় মামলাটি বদলি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৫ অক্টোবর আসামি ঊর্মি শুধু শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকারপ্রধান নোবেল বিজয়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুকে লেখেন। যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধানসম্মতভাবে গঠিত একটি সরকারপ্রধান সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
গত ৬ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। পরে ৭ অক্টোবর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।