সুজলা-সুফলা ষড়ঋতুর রঙ্গমঞ্চ আমাদের রূপসি বাংলা। সবুজ-শ্যামল একেক ঋতুর একেক রূপে সাজে। প্রতিটি ঋতু তার রূপবৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হয়। রূপসি বাংলার সৌন্দর্যের অন্যতম হচ্ছে স্বর্ণলতা।
গ্রামীণ ভাষায় কেউ কেউ এটিকে আলোকলতা বা সোনা লতাও বলে। বাংলার পথে-প্রান্তরে আপন রূপের মহিমা ছড়িয়ে থাকে এ উদ্ভিদ। আগে গ্রামের আনাচে-কানাচে ঔষধিগুণ সম্পন্ন পরজীবী উদ্ভিদ স্বর্ণলতার দেখা মিললেও এখন কদাচিৎ চোখে পড়ে। হলুদ রঙের গালিচায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে স্বর্ণলতা।
এমন দৃশ্য চোখে পড়ে যশোরের মনিরামপুর-ঝিকরগাছা আঞ্চলিক সড়কের দেবিদাসপুর এলাকায়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ঝুরি ঝুরি হলুদ সুতা ঝুলে আছে। এর ওপর রোদ পড়লে চকচক করে।
শীতের পাতাঝরা প্রকৃতিতে মোহনীয় সৌন্দর্য ছড়ায় এ স্বর্ণলতা।
তবে গ্রামগঞ্জে এখন খুব কমই চোখে পড়ে এ পরজীবী উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদ বেশিরভাগ দেখা যায় রাস্তার পাশের ঝোপঝাড়ে। এই উজ্জ্বল রং বহুদূর থেকে নজর কাড়ে। একসময় গ্রামীণ পথের ধারে গাছে গাছে জালের মতো বিস্তার করত স্বর্ণলতা। এখন এ লতা প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, দেবিদাসপুরের রাস্তার পাশে ঝোপঝাড় এ স্বর্ণলতা দেখতে পাওয়া যায়। গাছেই এর জন্ম, গাছেই বেড়ে ওঠা আর বংশবিস্তার। কোনো পাতা নেই, লতাই এর দেহ, কাণ্ড ও মূল।
মনিরামপুর সরকারি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণলতা বা আলোকলতা একটি পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ। চোষক অঙ্গ দিয়ে খাদ্য সংগ্রহ করে। সোনালি রঙের চিকন লতার মতো বলে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. মাহমুদা আক্তার বলেন, জীবন্ত গাছে জন্ম নেয়, পরগাছা হয়ে টিকে থাকে। যে গাছে জন্মায় সেই গাছের ডাল ও কাণ্ড থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। প্রাকৃতিকভাবে বংশবিস্তার করে এ লতা।