অনেক খাবারই আমরা ছোটবেলা থেকে স্বাস্থ্যকর মনে করে আসছি। পরিবার, সমাজ ও বিজ্ঞাপন আমাদের মস্তিষ্কে গেঁথে দিয়েছে কলা, পালং শাক, আঙুর বা সয়া সসের মতো খাবার শরীরের জন্য ভালো—এমন ধারণা। তবে সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণা ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য বলছে, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এই পরিচিত স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোও হৃৎপিণ্ড ও কিডনির জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
শরীরের অবস্থা মানুষের মধ্যে ভিন্ন। বিশেষ করে কিডনি দুর্বল হলে, হৃদরোগ থাকে বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ নেওয়া হয়, তখন খাবারের লবণ, পটাসিয়াম ও বিপাক প্রক্রিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। ফলে নিরাপদ মনে করা খাবারগুলোও কখনো ক্ষতি করতে পারে।
১. কলা কলা সাধারণত শক্তিবর্ধক ও পুষ্টিকর ফল হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এতে পটাসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় কিডনি দুর্বল ব্যক্তিরা অতিরিক্ত পটাসিয়াম বের করতে পারে না। যারা পটাসিয়াম ধরে রাখার ওষুধ নেন, তাদের জন্য কলা অতিরিক্ত বিপদ তৈরি করতে পারে।
২. আঙুর আঙুরকে অনেকেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উপকারী মনে করেন। তবে আঙুরে এমন কিছু উপাদান থাকে যা লিভার ওষুধ ভাঙার প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে। লিভার প্রতিস্থাপিত বা ওষুধে সংবেদনশীল ব্যক্তিরা আঙুর খেলে ওষুধের ঘনত্ব বেড়ে শরীরে বিষক্রিয়ার মতো প্রভাব তৈরি হতে পারে।
৩. পালং শাক পালং শাক ভিটামিনে সমৃদ্ধ এবং রক্তাল্পতা বা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। কিন্তু এতে পটাসিয়ামের পরিমাণ বেশি, এবং ভিটামিন কে থাকায় রক্ত পাতলা করার ওষুধের কার্যকারিতা কমাতে পারে। হৃদযন্ত্রে কৃত্রিম ভালভ থাকা বা রক্ত জমাট বাঁধা রোধে ওষুধ নেওয়ার ক্ষেত্রে এটি সাবধানতার সঙ্গে খেতে হবে।
৪. সয়া সস সয়া সস খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। তবে এতে লবণের পরিমাণ অত্যধিক, যা শরীরে পানি ধরে রাখে, রক্তচাপ বাড়ায় এবং হৃৎপিণ্ড ও কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন রক্তচাপের ওষুধ নেওয়া বা হৃৎপিণ্ড দুর্বল ব্যক্তিরা বিশেষভাবে সাবধান হোন।
সতর্কবার্তা: এই খাবারগুলো খারাপ নয়। সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষ এগুলো নিরাপদে খেতে পারেন। বিপদের মূল কারণ হলো শরীরের অসুস্থতা, কিডনির দুর্বলতা, হৃদরোগ বা ওষুধের প্রভাব। তাই ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অনুযায়ী খাবার বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত পটাসিয়ামযুক্ত ফল বা লবণ সমৃদ্ধ খাবার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।











