খবর বাংলা
,
ডেস্ক
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখ বাংলাদেশ ছেড়ে অন্য কোনো দেশে পালিয়েছেন কি না—এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, মূল সন্দেহভাজনদের সঠিক অবস্থান শনাক্তে তদন্ত কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে।
এদিকে ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার মধ্যে এ বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য জানাতে ব্যর্থ হলে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষুব্ধরা।
এই প্রেক্ষাপটে রোববার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত থেকে হাদি হত্যা মামলার তদন্তের সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিবিপ্রধান মো. শফিকুল ইসলামের উপস্থিত থাকার কথাও রয়েছে।
ডিবিপ্রধান জানান, গত আট দিনে তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, কারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং কোন অস্ত্র ও মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছে—সেসব আলামত ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অন্যান্য জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা আরও জানান, ফয়সাল করিম মাসুদ ও আলমগীর শেখ নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ডজনখানেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রধান আসামির বাবা, মা, স্ত্রী, শ্যালক এবং এক বান্ধবীও রয়েছেন।
তবে প্রধান আসামি মাসুদ ও তার সহযোগীর অবস্থান সম্পর্কে এখনো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার দাবি করা হলেও ডিবি জানায়, বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে, এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছিল, ইমিগ্রেশন ডাটাবেজে তাদের দেশত্যাগের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পাসপোর্ট ব্লক থাকায় বৈধভাবে দেশ ছাড়ার সুযোগ নেই বলেও জানানো হয়। তবে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
হাদি হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, হামলার আগে ফয়সাল করিম মাসুদ একাধিকবার তার স্ত্রী, বান্ধবী ও শ্যালকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তাদের তিনজনকে দুই দফায় মোট নয় দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া হামলার আগে ও পরে সহায়তার অভিযোগে আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে ঢাকায় জানাজা শেষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে দাফন করা হয়।
তথ্য সূত্র : কালের কণ্ঠ










