নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সর্বশেষ সাক্ষি তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ আবারো পিছিয়েছে।
এবার নিয়ে সর্বশেষ সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ দশম বারের মতো পেছালো।
আগামি ৮ ফেব্রুয়ারি এই তারিখ দেন টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারক আফরোজা বেগম এই আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রæয়ারি) এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল।
টাঙ্গাইলের সরকারি কৌশুলী (পিপি) এস আকবর খান জানান, ফারুক আহমেদ হত্যার পর যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল, সেই জিডির নথি তলবের আবেদন করেছিল আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।
শুনানী শেষে গত ২৫ জানুয়ারি বিচারক আফরোজা বেগম আবেদনটি নাকচ করে দেন।
বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহের সাক্ষি গ্রহণের সময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, জিডি তলবের যে আবেদন নাকচ করে দেয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।
তাই তারা সাক্ষ্য গ্রহণ মুলতবি রাখতে বলেন।
পরে বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করেন। তিনি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামি ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখ দেন।
প্রসঙ্গত, “অসুস্থ” থাকায় কারাগার থেকে আসামি আদালতে আনা হয়নি।
অথবা তদন্তকারী কর্মকর্তা হাজির হননি এই কারণে এর আগে নয়বার সাক্ষ্য গ্রহণে তারিখ পিছিয়েছে।
অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান জানান, মামলার কারাগারে থাকা আসামি সাবেক পৌর মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি ও বাবুকে আদালতে হাজির করা হয়।
জামিনে থাকা আসামি সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ওরফে রানাসহ সবাই হাজির হন।
মামলা সূত্রে জানা –
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজ পাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
তখন মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করা হয়।
২০১৪ সালে এই মামলায় জড়িত থাকা সন্দেহে আনিছুল ইসলাম ওরফে রাজা এবং মোহাম্মদ আলী নামের দুই জনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
তাদের আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেন।
সেখানে এই হত্যা মামলার সঙ্গে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার অপর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান ওরফে মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ওরফে কাকন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি সানিয়াত খান ওরফে বাপ্পা’র জড়িত থাকার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন তিনি।
তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
এতে সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান’রা চার ভাইসহ ১৪ জনকে আসামী করা হয়।
২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এরমধ্য দিয়েই বিচার কাজ শুরু হয়।