২৩ জুলাই ২০২৪—বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি রক্তাক্ত অধ্যায়। কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে সরকারের গণগ্রেফতার আর হুমকি-ধমকি তখন তুঙ্গে। এদিন আপিল বিভাগের রায় মেনে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চাকরির ৯৩% মেধা আর ৭% কোটা কার্যকর থাকবে। বাতিল হয় মুক্তিযোদ্ধা নাতিপুতি, নারী ও জেলা কোটা।
তবে আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন—এতো রক্ত আর নিখোঁজের পর শুধু প্রজ্ঞাপনে আন্দোলন শেষ হবে না। এরই মধ্যে রাতের অন্ধকারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্রদের গণগ্রেফতার শুরু হয়। মাত্র ৪ দিনেই হাজার হাজার ছাত্রলীগ-বহির্ভূত শিক্ষার্থী গ্রেফতার হন।
২৩ জুলাই কারফিউর শহরে সেনাবাহিনী আর পুলিশের চেকপোস্টে থমথমে পরিবেশ। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জানায়, প্রজ্ঞাপন যথেষ্ট নয়—হতাহতদের বিচার না হলে আন্দোলন চলবে।
এদিকে এখনো নিখোঁজ আন্দোলন সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। তার বাবার আর্তনাদ, বন্ধুরা হাসনাত-নাহিদ-সারজিসদের অশ্রু আর আতঙ্কে স্তব্ধ সবাই। এদিনই বিমানবাহিনী প্রধান হেলিকপ্টারে ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেন। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ২৩ দিনের আন্দোলনে স্বাস্থ্য খাতে ক্ষতি ৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
ডিবির হারুন উর রশীদের হুমকিমূলক বক্তব্যে আরও আতঙ্ক ছড়ায়। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখিত বিবৃতি দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও বিত্তবানদের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
তবে অন্ধকারের মধ্যেও আশার আলো—২৩ জুলাই রাত ৯টা থেকে সীমিত আকারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হয়। আর সেই ইন্টারনেটেই স্পষ্ট হতে থাকে আটক-নিহতদের ভয়াবহ চিত্র, ছড়িয়ে পড়ে আরও ক্ষোভ।