অলক কুমার : প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ও রাষ্ট্র কর্তৃক দেয়া সকল প্রকার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন টাঙ্গাইলের অধিকাংশ গণমাধ্যম কর্মী।
টাঙ্গাইলে কর্মরত প্রথম সারির জাতীয় দৈনিক বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকার বঞ্চিত গণমাধ্যম কর্মীরা এই বিষয়ে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়াও বিশিষ্ট সিনিয়র গণমাধ্যম কর্মী রতন আহমেদ সিদ্দিকী এই বিষয়ে সংবাদ তৈরি করে উনার ব্যক্তিগত ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ারও করেছেন।
বিশিষ্ট সিনিয়র গণমাধ্যম কর্মী রতন আহমেদ সিদ্দিকী উনার ফেসবুক টাইম লাইনে লিখেছেন –
সকল অনুদান একটা শ্রেণির সাংবাদিকদের কাছে বিতরণ টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মধ্যে
অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সাংবাদিকদের দুঃখ প্রকাশ।
টাঙ্গাইলে শুধুমাত্র টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ৩০ এপ্রিল টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলাস্থ বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে টাঙ্গাইলের সাংবাদিকদের জন্য প্রদেয় এই সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রানুয়ারা খাতুন; টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন; সহ-সভাপতি এম এ ছাত্তার উকিল; একরামুল হক খান তুহিন; কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রমুখ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃক প্রদেয় ত্রাণ সামগ্রী টাঙ্গাইলের সকল সাংবাদিকদের জন্য প্রদানের নির্দেশ থাকলেও শুধু মাত্র টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মধ্যে তা বিতরণ করায় কয়েকটি সংগঠনের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার অন্যান্য সাংবাদিকরা দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
টাঙ্গাইলে অনেক লোকাল ও জাতীয় ইংরেজী, বাংলার পত্রিকার সাংবাদিক এমনকি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকেরাও এবিষয়ে ফোনে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন কমপক্ষে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি তো আমরা কামনা করতে পারি।
যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার, তাই তার প্রশাসনের নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গিতে সরাসরি প্রদান করা উচিত।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনির সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সামগ্রীগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রদান করলেও আমার মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে।
তবে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বাইরেও টাঙ্গাইলে সাংবাদিকদের কয়েকটি সংগঠন থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন একটি অনুষ্ঠানে আছি এ বিষয়ে আমি পরে কথা বলবো।
এ বিষয়ে আরো খোঁজ খবর –
পরে এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় যে, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বাইরে অন্য কোন গণমাধ্যম কর্মী প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাননি।
এছাড়াও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে দেয়া ৫০ হাজার টাকা করে অনুদানও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের ০৭ জন গণমাধ্যম কর্মীকে দেয়া হয়েছে।
যারা এই অনুদান পেয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই শহরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, শহরের বহুতল ভবনের মালিক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
এছাড়া যারা এই অনুদান পেয়েছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন নিয়মিত সাংবাদিকতা করেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সঠিক ভাবে যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাষ্টের টাকা বিতরণ করা হলে, সত্যিকার অর্থে যাদের প্রাপ্য তারাই এই অনুদান পেত।
আরো জানা যায়, বিগত করোনার সময় সাংবাদিক কাম সরকারী কর্মচারী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এবং প্রেসক্লাবের মাধ্যমে সরকারি অনুদান গ্রহণ করেন।
সঠিক যাচাই-বাছাই করে অনুদান প্রদান করলে একই ব্যক্তি দুই জায়গা থেকে সরকারি অনুদান পেত না বলে মতামত প্রকাশ করেন অভিজ্ঞ মহল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সাংবাদিক জানান, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহার সব সাংবাদিকই আশা করেন, এটা সবারই প্রাপ্য; কিন্তু দুঃখের বিষয় অধিকাংশ সাংবাদিক এই উপহার পায়নি।