নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল শহরের বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর উপরে ধসে পড়া নির্মাণাধীণ সেতুটি ঠিকাদারের নিজ খরচে পুরোটা ভেঙ্গে আবার নতুন করে নির্মান কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২০ জুন) সকাল ১১টায় ধসে পড়া সেতুটি পরিদর্শন শেষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক একেএম রশিদ আহম্মদসহ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন।
তবে ধসে পড়া সেতুটির ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ায় কয়েক ধাপে ৬০ শতাংশ বিল পরিশোধ করা হয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
আরো পড়ুন – ভোগান্তি শেষ হইয়াও হইলো না শেষ; সাড়ে তিন কোটি টাকাই জলে
তবে সেতুটি পুনরায় সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাদের বাকি বিল পরিশোধ করা হবে।
পৌরসভা সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছিল।
আট মিটার প্রসস্থ ও ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৮৪১ দশমিক ৩৩ টাকা।
ঢাকার ব্রিক্সস এন্ড ব্রীজ লিমিটেড এবং দি নির্মিতি নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজটি নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়।
২০২০ সালের ৫ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সেতু নির্মাণের চুক্তি সম্পাদন হয়।
কিন্তু টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিরুল ইসলাম খান ও ছয় নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মো. জামিলুর রহমান খানের নেতৃত্বে স্থানীয় ১০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিয়ে নেন; পরে তারা এটি বাস্তবায়ন শুরু করেন।
আরো পড়ুন – হত্যার বিচার চাওয়ায় শিক্ষার্থীদের টিসি দেয়ার অভিযোগ সৃষ্টি’র বিরুদ্ধে
সেতু নির্মাণের তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রকৌশলীরা জানান, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা যেমন মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজটি নিয়ে নিয়েছিলেন; ঠিক তেমনিভাবে সেতু নির্মাণ কাজেও ছিল অনেক অবহেলা।
তাদের মৌখিক ও লিখিতভাবে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হলেও তারা তা মানেননি। নির্মাণের বিভিন্ন স্তরে দরপত্রে উল্লেখিত নির্দেশনা মোতাবেক কাজ না করে; নিজেদের খেয়াল খুশিমত কাজ করছিলেন।
মূল ঠিকাদারের বক্তব্য –
ব্রিক্সস এন্ড ব্রীজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মোস্তফা মুহাম্মদ মাসুদ জানান, তারা এবার নিজেদের তত্বাবধানে সেতুটি পূণরায় নির্মাণ কাজ করবেন।
তাদের সাথে টাঙ্গাইলের ঠিকাদাররাও থাকবে তবে সব কিছু তিনিই দেখাশোনা করবেন; এছাড়া আগের মতো আর সাব-ঠিকাদারদের উপর নির্মাণ কাজ ছেড়ে দেবো না।
আগে এবিষয়ে কথা বলতে পারিনি; কিন্তু এখন জবাব দেবার সুযোগ এসেছে। তাই সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকল কিছুই তার নিয়ন্ত্রনেই থাকবে।
তিনি আরো জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেতুটি ভেঙ্গে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে; কর্তৃপক্ষ যদি এ বিষয়ে কোন অঙ্গীকারনামা চান তাহলে তাও দেওয়া হবে।
আরো পড়ুন – পড়তে এসেছি, মরতে নয়!!
আর সেতুটি পুনরায় নির্মাণ কাজ করার সময় দরপত্রে উল্লেখিত সকল শর্ত মেনেই কাজ করা হবে।
পৌর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য –
টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী জানান, ধসে পড়া সেতুটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
তবে সেতুটি ভেঙ্গে ফেলতে সকল ব্যয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বহন করবে। এছাড়া সকল নির্দেশনা মেনে সেতুটি যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করে; সেজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একটি অঙ্গীকার নামা প্রদান করবে। সম্পাদনা – অলক কুমার