নিজস্ব প্রতিবেদক : আবারও টাঙ্গাইলের মধুপুরে ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসার অফিসে অভিযান। মাদক ও পর্ণোগ্রাফি সংক্রান্ত অপরাধের দায়ে দুইটি পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই যুবকের অর্থদন্ডসহ তিন মাসের জেল দিয়েছেন।
দন্ডিতরা হলো- অরণখোলা এলাকার কালারবাজারের শাহজাহান আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর সরকার (৩০) ও আউশনারা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে শাহ আলম (২৬)।
এ সময় তাদের কাজে ব্যবহত ৮ টি ল্যাপটপ জব্দ দেখানো হয়েছে।
রোববার (২৮ মে) বিকেলে মধুপুর পৌরশহরের মাস্টার পাড়া এলাকায় ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসার অফিসে অভিযান চালিয়ে ল্যাপটপসহ তাদের কে আটক করা হয়।
এ নিয়ে দু’দফায় অভিযানে ৬ যুবককে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতে।
এর আগে গত ২৪ মে চার যুবককে অর্থদন্ডসহ ৬ মাসের জেল দিয়েছেন।
এ সময় তাদের কাজে ব্যবহ্যত ৬ টি ল্যাপটপ, একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার ও ১০ টি মোবাইল ফোনসেট জব্দ দেখানো হয়েছে।
দু’ দফায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমীন এবং সহকারী কমিশনার ( ভূমি) জাকির হোসাইন পৃথক দৃটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
২৪ মে মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে সালমান খান(২২), মধুপুর সদরের ঝন্টু পালের ছেলে অন্তর পাল(২১), মেহেদী হাসান ফাহিম(২৩) ও ধনবাড়ী উপজেলার নরিল্যার রফিকুল ইসলামের ছেলে আশিকুর রহমান(২১)।
অর্থদন্ডসহ ৬ মাসের ও ২৮ মে অরণখোলা এলাকার কালারবাজারের শাহজাহান আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর সরকার (৩০) ও আউশনারা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে শাহ আলম (২৬) অর্থদন্ডসহ তিন মাসের জেল প্রদান করা হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয়দের কথা –
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্র জানায়, পৌর এলাকার মাস্টার পাড়া ও টাঙ্গাইল – জামালপুর মহাসড়কে পাশে নয়াপাড়া মসজিদের পাশে জনৈক সাইফুলের বাসা ভাড়া নিয়ে তারা নেটের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসার নামে অবৈধ ব্যবসা চালাতো।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা ইয়াসমীন, সহকারী কমিশন ভূমি জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে সেখানে অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে আটক ও তাদের ব্যবহ্যত ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল জব্দ করা হয়।
এ সময় মাদকও উদ্ধার করা হয়। নেট অফিসের জন্য ভাড়া নেয়া বাসাটি প্রশাসন গিলগালা করে দেয়।
এসময় খবর পেয়ে বাসার মালিক সাইফুল ইসলাম আসলে তার উপস্থিততে গিলগালা করা হয় ও মাস্টার পাড়া বাসার মালিককে এক দিনের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এ সময় মধুপুর থানার এসআই কামরুল ইসলাম, পুলিশ সদস্য ও জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। খবর পেয়ে স্থানীয় উৎসুক জনতা ভীড় জমায়।
পরে পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ইউএনও শামীমা ইয়াসমীন শাহ আলম কে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড ও তিন মাসের কারাদন্ড এবং সহকারী কমিশনার ভূমি জাকির হোসাইন জাহাঙ্গীর সরকারকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড তিন মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
২৪ মে সালমান, অন্তর, মেহেদী ও আশিকুর কে মাদক ও পর্নোগ্রাফি অপরাধের দায়ে ২০ হাজার করে টাকা জরিমানা এবং ৬ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন। সন্ধ্যায় তাদের হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় জানান, মধুপুরে দীর্ঘ দিন যাবত ফ্রিল্যান্সিং নেট ব্যবসার নামে উঠতি বয়সের যুবকরা রাত জেগে নেটের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। নেট ব্যবসার আড়ালে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনে মেতে উঠে। রাতভর তাদের ছুটাছুটিতে স্থানীয় অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। অভিযোগ উঠেছে ফ্রিল্যান্সিং এর মাদক ও পর্ণগ্রাফির। মধুপুরের বিভিন্ন গ্রাম পাড়া মহল্লায় আস্তানা গড়েছে এ নেটের দুনিয়ায় উঠতি বয়সেরা যুবকরা। নেটে কাজের পাশাপাশি মাদক ও পর্ণগ্রাফিতে দিন দিন তারা আসক্ত হয়ে পড়ছে। গতকাল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এমনি একটি বাসা করা বাসায় অভিযান চালালে বেড়িয়ে আসে নেটের নামে মাদক আর পর্ণোগ্রাফির চিত্র।