নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের বাসাইলে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে আন্দোলনকারীসহ বিএনপির ৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তবে পুলিশের দাবি কোটা আন্দোলন নয়, বিষ্ফোরকদ্রব্য আইনে পুরোনো মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বাসাইলে কোটা আন্দোলনের পর থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত এই ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বাসাইল পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান তুহিন, উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক (বহিস্কৃত) ও বাসাইল পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সোহানুর রহমান জুয়েল, উপজেলা বিএনপির সদস্য (বহিস্কৃত) নূরুল ইসলাম রাজু, পৌর বিএনপির সদস্য মেহেদী হাসান বিপ্লব, কোটা আন্দোলনকারী বাসাইল উত্তরপাড়ার আব্দুল হামিদ মেলেটারীর ছেলে পাপ্পু মিয়া (২১) ও বাসাইল পূর্বপাড়ার বাদশা মিয়ার ছেলে ইমতিয়াজ আহমেদ রোকন (২১)।
এদের মধ্যে বাসাইল পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান তুহিনকে অপর একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এজন্য ওইদিনই তিনি জামিনে মুক্তি পান।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৭ জুলাই বাসাইল বাসস্ট্যান্ডে কোটা আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।
এদিন বাসাইল ডিগ্রী কলেজ, সরকারি জোবেদা-রুবেয়া মহিলা কলেজ, বাসাইল গৌবিন্দ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বাসাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মালেক মাজেদা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
গ্রেফতারকৃত পাপ্পু মিয়া ও ইমতিয়াজ আহমেদ রোকন কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত না।
তবে পাপ্পু মিয়া গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক হিসেবে বাসাইলে কাজ করেছেন।
আন্দোলনকারী ও অন্যান্যদের বক্তব্য –
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোটা আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘গত ১৭ জুলাই বাসাইলে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ কর্মসূচিতে পাপ্পু ও রোকনও অংশ নিয়েছিল। পরে তাদের দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।’
কোটা আন্দোলনকারী গ্রেফতারকৃত পাপ্পুর বাবা আব্দুল হামিদ মেলেটারী বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ পরিবার। আমার ছেলে কোটা আন্দোলনে গিয়েছিল।
আমার ছেলেকে পুরোনো একটি বিষ্ফোরকদ্রব্য আইনে করা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাপ্পু এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থক হিসেবে কাজ করেছে।
আমার ছেলে কখনোই বিএনপি বা তার অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল না। পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। পাপ্পুর দ্রত মুক্তি চাই।’
কোটা আন্দোলনকারী গ্রেফতারকৃত ইমতিয়াজ আহমেদ রোকনের বড় ভাই রেজোয়ান বলেন, ‘আমার ছোট ভাই রোকন কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত না।
সে কোটা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। তাকে বিএনপির মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন আল জাহাঙ্গীর বলেন, ‘২০২২ সালের ডিসেম্বরে কাঞ্চনপুরের বিষ্ফোরকদ্রব্য আইনে করা মামলায় পুলিশ ছয়জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে।
কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। বিএনপির চার নেতার মধ্যে দুইজন বহিস্কৃত।
তবে পাপ্পু ও রোকন বিএনপি বা এর অঙ্গসংগঠনের সাথে জড়িত না।’
পুলিশের বক্তব্য –
বাসাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুরাদ হোসেন বলেন, ‘২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে কাঞ্চনপুরে বিষ্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা হয়।
ওই মামলায় পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’