কুয়াশাঝরা সকাল আর ঘাসের ওপর ছড়িয়ে পড়া শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের বার্তা। শীতের শুরুতেই টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে লেপ-তোষক তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন কারিগররা। ঋতু বৈচিত্রে রাতে কুয়াশা আর দিনে হালকা গরম থাকলেও ঠান্ডার প্রকোপ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। ফলে ঠান্ডা নিবারণে এ উপজেলার মানুষের প্রস্তুতিও চলছে পুরোদমে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লেপ-তোষক তৈরীর দোকান গুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মালিক-শ্রমিক লেপ-তোষক তৈরীর সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা জানান, শীত মৌসুমের শুরুতেই ক্রেতারা দোকানে পছন্দমতো লেপ-তোষক তৈরীর অর্ডার দিয়ে রেখেছেন।
উপজেলার চারান গ্রামের ফজিলা আক্তার লিলি বলেন, ঠান্ডা বাড়ছে, তাই পুরাতন লেপের তুলা বদলিয়ে নতুন কাপড় দিয়ে সেলাই করে নিচ্ছি। পরে একটু ঝামেলা হয় তাই আগে ভাগেই লেপ-তোষক বানাচ্ছি।
কালিহাতী সদরের মুন্সিপাড়া জলিল বেডিং হাউজের মালিক আব্দুল জলিল বলেন, প্রতিটি লেপ-তোষক বানাতে মজুরি হিসেবে দুইশত টাকা করে খরচ হয়। একজন কারিগর ভালো করে তৈরী করলে দিনে ২টি লেপ তৈরী করতে পারে। প্রতিটি ৪-৫ হাত লেপ এক হাজার দুইশ টাকা, তোষক এক হাজার তিনশ এবং জাজিম তিন হাজার আটশ থেকে চার হাজার দুইশ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি করা যায়। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষক বিক্রি বেশি হয়। গত বছরের তুলনায় এ বছর লেপের তুলার দাম একটু বেশি। প্রতি কেজি কালা তুলার দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিমুল তুলা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, সাদা তুলা ১০০ টাকা ও কাপাশ তুলা ১৫০ টাকা করে কিনতে হচ্ছে।
উপজেলার চারান বাজারের একটি পাইকারী বেডিং হাউজের লেপ-তোষক তৈরীর কারিগর আবুল কাশেম বলেন, শীত শুরু হতে না হতেই কর্ম ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। আমরা ৪-৫ হাতের একটি লেপ ২ ঘন্টায় তৈরী করে দিতে পারি। প্রতিটি লেপের মজুরি দেয় একশ থেকে দেড়শত টাকা। তোষকের মজুরি দেয় ৫০ থেকে একশ টাকা এবং জাজিমের মজুরি দেয় ৯০ থেকে ১২০ টাকা। সারাদিনে ৬-৭টি লেপ বানাতে পারি।
এদিকে বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম থাকায় এর চাহিদা বেশি হওয়ায় এবং বেশি আয়ের আশায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে এ উপজেলার লেপ-তোষক তৈরীর কারিগররা।