সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের অখন্ডতা রক্ষা ও যে কোন ধরণের আগ্রাসী এজেন্ট বা কর্মকান্ড প্রতিরোধে সেনাবাহিনীর সম্পূর্ণ সক্ষমতা রয়েছে এবং এ ধরণের কর্মকান্ড ঠেকাতে সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত। তিনি বলেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে এবং শান্তিরক্ষা মিশনে এখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থান আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রæয়ারি) সকালে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল শহীদ সালাউদ্দিন সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬টি ইউনিট এর রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ (এসবিপি, বিএসপি, বিজিবিএম, পিবিজিএম, বিজিবিএমএস, পিএসসি, জি) প্যারেড গ্রাউন্ডে উপস্থিত হলে ১৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও ঘাটাইল এরিয়া কামান্ডার মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম তাকে অভ্যর্থনা জানান। পরে প্যারেড কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯ পদাতিক ডিভিশনের একটি সম্মিলিত চৌকষ দল কুচকাওয়াজ প্রদর্শন এবং সেনাপ্রধানকে সালাম প্রদান করে।
সেনাপ্রধান রেজিমেন্টাল কালারপ্রাপ্ত ইউনিটসমুহকে অভিনন্দন জানিয়ে আরো বলেন, রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্তি যে কোন ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান এবং পবিত্র আমানত। কর্মদক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম ও কর্তব্যনিষ্ঠার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রাপ্ত পতাকার মর্যাদা রক্ষা এবং দেশমাতৃকার যেকোন প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ইউনিটসমূহকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সাভার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. আকবর হোসেন, ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও যশোর এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সহ প্রাক্তন সেনাবাহিনী প্রধানগন, সেনা সদর ও বিভিন্ন ফরমেশনের উর্ধতন সেনা কর্মকর্তাগন, কোর অব আর্টিলারি, ইঞ্জিনিয়ার্স, সিগনালস ও বীর এ চাকুরিরত, অবসরপ্রাপ্ত উর্ধতন সেনা কর্মকর্তা এবং রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্ত ইউনিট সমুহের প্রাক্তন অধিনায়কবৃন্দ, সুবেদার মেজরগন সহ সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।
রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ পার্বত্যচট্টগ্রামে অভিযান দাবানল ও উত্তরণ, অভিযান নবযাত্রা, আলোর সন্ধানে ইত্যাদিতে অংশ নেয়া সেনানীদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায়ই বাংলাদেশ অল্প সময়ের মধ্যে স্বাধীনতা অর্জন করে। তিনি বলেন, যুগের সাথে তাল মেলাতে সেনাবাহিনীতে পৃথক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যখন যা প্রয়োজন হবে সেনাবাহিনীর জন্য তাই করা হবে। বেসিক সোলজার প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহŸান জানিয়ে সেনা প্রধান বলেন, অত্যাধুনিক ও কার্যকর প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই।
প্রকাশ, গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক ইউনিট সমুহ কতৃর্ক সেনাবাহিনী তথা দেশমাতৃকার সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য রেজিমেন্টাল কালার প্রদান করা হয়। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪ ফিল্ড রিজিমেন্ট আর্টিলারি, ১১ আর ই ব্যাটালিয়ন, ১৮ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, ৩ সিগনাল ব্যাটালিয়ন, ১৭ বীর এবং ১৯ বীর এই কালার প্যারেডে অংশগ্রহণ করে এবং প্রধান অতিথি সেনা প্রধানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা গ্রহন করে।
পরে সেনা প্রধান উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে কুশলা বিনিময় করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।