নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে কৃষকদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুইযুগ পূর্তি অনুষ্ঠানে ২০ কৃষককে অতিথি করে সম্মাননা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কৃষকদের এতো গুরুত্ব দিয়ে অতিথি করায় এলাকায় প্রতিষ্ঠানটি বেশ প্রসংশিত হয়েছে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রুভ শিক্ষা পরিবারের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শুরুতেই দেশ ও জাতির কল্যাণে দোয়া করা হয়।
এরপর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ডিসপ্লে প্রদর্শন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থী উপস্থাপক বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় উপস্থাপনা করে অতিথিদের মুগ্ধ করে।
জানা যায়, উপজেলার পাথরাইল এলাকায় ইমপ্রুভ শিক্ষা পরিবারের দুইযুগ পূর্তি উপলক্ষে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠানে ২০ কৃষককে সম্মাননা দেওয়া হয়।
স্কুলে পড়ালেখা করেও নৈতিক শিক্ষা অর্জন করা যায় তার প্রমান দিলেন শিক্ষার্থীরা।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে শিশুরা জানাযা নামাজ প্রদর্শণ করে দেখালেন উপস্থিতিদের।
সনাতন ধর্মাবলম্বী শিশুরা ব্রাহ্মণের ওপর নির্ভর না করে নিজেদের সরস্বতি পূজা যেন নিজেরাই করতে পারে; এজন্য বিদ্যালয় হিন্দু শিক্ষার্থীদের পূজাও শিখিয়েছেন নিখুঁতভাবে।
শিক্ষার্থীরা সরস্বতি পূজা প্রদর্শণ করে দেখালেন অনুষ্ঠানে।
মাতৃভক্তি বায়েজিদ চরিত্র প্রদর্শন ও মোবাইল ফোনে আসক্তির ক্ষতিকারক দিক প্রদর্শন করে শিশুরা।
এছাড়াও বিভিন্ন ব্যতিক্রমী ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়।
ইমপ্রুভ চাইল্ড কেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি কৃষকরা সম্মাননা ও উপহার পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
অতিথি কৃষকরা বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, আমরা কৃষক; সমাজে আমাদের এতো মর্যাদা দেখানো হয় না।
প্রতিটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথি করা হয় সমাজের বিশেষ ব্যক্তিদের।
কিন্তু আজ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের মতো কৃষকদের অতিথি করে সম্মান দেখিয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে ২০ কৃষককে অতিথি করায় তাদের পরিবারের একাধিক সদস্যসহ বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য মানুষ ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানটি উপভোগ করতে আসেন।
অভিভাবকদের কথা :
বক্তব্যে অভিভাবকরা বলেন, ‘অনুষ্ঠানে কৃষকদের মূল্যায়ন করা হয়েছে, এটা সত্যিই অনেক ভালো লেগেছে।
এসব ব্যতিক্রমী উদ্যোগের পাশাপাশি দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষার মান উন্নয়ন নিয়েও প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে।
শিক্ষার্থীর পড়ার মান বজায় রাখতে প্রতিনিয়ত হোম ভিজিট, মোবাইল কমিউনিকেশন, রাতে পড়ার টেবিলে শিক্ষার্থীরা আছে কি না সেজন্য রাতে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পরিদর্শন করে থাকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
ট্রাফিক রুলস পাঠ্যকরণের পাশাপাশি শিশুদের পরিক্ষা ভয় দূর করতে মাসিক ভাইবা পরিক্ষা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
শিশুদের ঝড়ে পড়া রোধে বিনা বেতন বা অর্ধবেতনে পাঠদান করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
পরিচালকের কথা –
ইমপ্রুভ শিক্ষা পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘সমাজে সকল পেশাজীবী মানুষ সমান গুরুত্বপূর্ণ।
সামাজিকভাবে কৃষকদের এতোটা সম্মান দেওয়া হয় না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি করা হয় বিশেষ ব্যক্তিদের।
এই বৈষম্য দূর করতে অনুষ্ঠানে ২০ জন কৃষককে অতিথি করা হয়। এই অনুষ্ঠানে কৃষকরাই ছিল প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি।
বিগত দিনে স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা, সফল মাতা, সফল পিতা-মাতা ও সফল প্রবাসীদের সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।’
“পড়া লেখা শেষে চাকরী নাই” ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মন থেকে এই হতাশা দূর করতে শিশুদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি কর্মমূখী শিক্ষা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, স্পোকেন ইংলিশ ও সাধারণ জ্ঞানের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে থাকি আমরা।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির দুইযুগ পূর্তিতে কেক কাটার পর মেধাবী শিক্ষার্থী ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথি কৃষকরা। সম্পাদনা : অলক কুমার