নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ বুধবার (৯ আগস্ট) আর্ন্তজাতিক আদিবাসী দিবস।
সারা দেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের মধুপুরের গড়াঞ্চলে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
প্রতি বছর দিবসটি পালন হলেও স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আদিবাসীদের সাংবাধানিক স্বীকৃতি মেলেনি।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়াঞ্চলে বসবাসরত ২৫ হাজারের বেশি আদিবাসী এখনও জীবন ধারণের জন্য বন ভূমি ও বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল।
স্বাধীনতার ৫২ বছরেও তারা ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি না পাওয়ায় উচ্ছেদ আতংকে দিনাতিপাত করছে
আদিবাসীদের বক্তব্য
মধুপুরের গারো ও কোচ সম্প্রদায়ের দাবি- মহান স্বাধীনতার ৫২ বছরেও সরকার তাদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি।
বংশ পরম্পরায় তারা হাজার বছর যাবৎ মধুপুর বনাঞ্চলে বসবাস করলেও সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও জমির মালিকানা না থাকায় ভূমি হারানোর আতংকে তাদের দিন কাটছে।
তাদের দাবি- মধুপুরের গড়াঞ্চলে যারা হাজার বছর ধরে বসবাস করছেন তারাই বনের রক্ষক।
বন দখলকারীদের সঙ্গে তাদের এক কাতারে ফেলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ১০ মাসে তিন পদে অধিষ্ঠিত এমপি কন্যা জাকিয়া!
তারা অভিযোগ করে- সরকার সামাজিক বনায়ন, খাস সম্পত্তি রক্ষা, ন্যাশনাল পার্ক বা জাতীয় উদ্যান, ইকো পার্ক স্থাপন ও কৃত্রিম লেক তৈরির নামে ভীতি সৃষ্টি করছে।
মাধ্যমে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে। দাবি আদায়ে তারা বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করলেও কোন সুফল পাচ্ছেনা।
ফলে এখনও নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ আতংক তাদের পিছু ছাড়ছে না।
আদিবাসী নেতাদের বক্তব্য
বাগাছাসের (বাংলাদেশ গারো ছাত্র পরিষদ) সভাপতি জনজেত্রা জানান, এতদাঞ্চলে জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর থেকে বনগুলো সরকার বনভূমি হিসেবে নিয়ন্ত্রণে নেয়।
মূলত সে সময় থেকেই তারা বিভিন্ন সময়ে উচ্ছেদের শিকার হয়েছেন- যার ধারাবাহিকতা এখনও চলছে।
এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদেরকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও মহান স্বাধীনতার ৫২ বছরেও ‘আদিবাসী’ হিসেবে তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি মেলেনি।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক জানান, রাষ্ট্র বা সমাজ কতখানি উন্নত, গণতান্ত্রিক বা সভ্য, তা বোঝা যায় সেখানে সংখ্যালঘু মানুষেরা কেমন আছেন, তা বিশ্লেষণ করে।
আদিবাসীদের ভূমি অধিকার রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।
জেলা প্রশাসকের বক্তব্য
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, ক্ষুদ্র নৃ-তাত্তি¡ক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প চলমান রয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় সাইকেল বিতরণ, কমিউনিটি সেণ্টার নির্মাণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক উন্নত জীবন ব্যবস্থা চলমান রাখতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল থেকে বিরত থাকার জন্য ক্ষুদ্র নৃ-তাত্তি¡ক জনগোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান জানান।