রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বা পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও

১০ মাসে তিন পদে অধিষ্ঠিত এমপি কন্যা জাকিয়া!

১০ মাসে তিন পদে অধিষ্ঠিত এমপি কন্যা জাকিয়া!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১০ মাসে পেয়েছেন আওয়ামী লীগের তিনটি পদ। বাবা ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী নেতা এবং সংসদ সদস্য।

ছাত্রজীবনে কখনো রাজনীতি না করলেও বাবার কারনেই পেয়েছেন আওয়ামী লীগের তিনটি পদ।

আরো পড়ুন – উচ্চ আদালতেও বড়মনির জামিন স্থগিত, ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ

এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ।

বলছিলাম টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের জ্যেষ্ঠ কন্যা জাকিয়া ইসলামের কথা।

সর্বশেষ সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে ঘোষিত টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে তিনি সদস্যপদ লাভ করেছেন।

এই ১০ মাসে তিনি হয়েছেন সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।

অবশ্য বাবা সংসদ সদস্য হওয়ার পর তিনি উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ লাভ করেন।

সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মেয়ে হওয়ায় সহজেই তিনি এ পদগুলো পেয়েছেন বলে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

কেউ কেউ সহজেই একাধিক পদ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নানা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

আরো পড়ুন – বাসাইল পৌরসভায় নৌকার যুগ শেষ, গামছার আমল শুরু

উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন অভিযোগ করেন, সংসদ সদস্য কন্যা জাকিয়া ইসলাম জীবনে কখনো ছাত্রলীগের রাজনীতি করেননি।

তাঁর বাবা ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।

রাজনীতির পূর্ব অভিজ্ঞতা বা কোন সম্পৃক্ততা না থাকলেও বাবার খুঁটির জোরে ২০১৯ সালে জাকিয়া ইসলাম সখীপুর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

এরপর ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর জাকিয়া ইসলাম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

এর সাত মাস পর গত ৫ মে ঘোষিত কমিটিতে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ পান।

আবার এর সোয়া তিন মাস পর গতকাল জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্য পদ পেয়েছেন।

সংসদ সদস্যের কন্যা বলে গত ১০ মাসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিনটি পদ পাওয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে।

স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য

সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডিএম শরিফুল ইসলাম শফি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৩০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি।

আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম।

এরপরও উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের কোথাও আমার স্থান হয়নি।

সংসদ সদস্যের অনুসারী না হওয়ায় আমাকে পদ বঞ্চিত করা হয়েছে।

অথচ সংসদ সদস্যের মেয়ে, ভাই, ভাগ্নেসহ এক ডজন আত্মীয় পদ পেয়েছেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মির্জা শরীফ বলেন, বাবা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য হওয়ার ক্ষমতা বলে জাকিয়া ইসলাম সহজে আওয়ামী লীগের চারটি পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয় বলেন, ছাত্রজীবনে জাকিয়া ইসলাম কখনো ছাত্রলীগ করেছেন এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অথচ বাবা সংসদ সদস্য হওয়ায় রাতারাতি তিনি চারটি পদ দখলে নিয়েছেন। অথচ যারা ত্যাগী তাদের অনেকেই পদ বঞ্চিত হয়েছেন।

পদ পাওয়া এমপি কন্যার বক্তব্য

এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য কন্যা জাকিয়া ইসলাম ফোনে বলেন, বাবার জন্য নয়, আমি আমার যোগ্যতা বলেই এসব পদ পেয়েছি। নিন্দুকেরা সারা জীবনই সমালোচনা করবেই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর বাসাইল) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম কমিটির ভালো-মন্দ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।