উচ্চ আদালতেও বড়মনির জামিন স্থগিত, ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ

টাঙ্গাইল শহর আ’লীগ সহ-সভাপতি বড় মনি

ডেস্ক নিউজ : ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড়মনিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।

একইসঙ্গে ভুক্তভোগীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আগামী ২১ আগস্ট ডিএনএ পরীক্ষার ফল আপিল বিভাগে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১২ জুলাই) আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান।

এর আগে গতকাল তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী জানান, গত ২৭ জুন ভুক্তভোগী এক সন্তানের জন্ম দেয়।

সেই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট ২১ আগস্টের মধ্যে জমা দিতে বলেছেন আপিল বিভাগ। আর এই সময় পর্যন্ত জামিন স্থগিত করেছেন।

বড় মনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের ভাই ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব।

গত ৫ এপ্রিল রাতে এক কিশোরী বাদী হয়ে গোলাম কিবরিয়া বড় মনির নামে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করে।

মামলার বিবরণী –

মামলায় বলা হয়, ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী (১৭) অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। মামলায় গোলাম কিবরিয়া বড় মনির পাশাপাশি তার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বড় মনি তাদের আত্মীয় এবং পূর্ব পরিচিত। হোয়াটস অ্যাপে তাদের কথা হতো।

ওই কিশোরীর ভাইয়ের সঙ্গে জমি নিয়ে সমস্যা হয়।

এ কথা বড় মনিকে জানানোর পর তিনি সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

বড় মনি পরে গত ১৭ ডিসেম্বর ওই কিশোরীকে শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশে একটি ১০তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে যেতে বলেন।

সেখানে যাওয়ার পর মেয়েটিকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন তিনি।

তাতে রাজি না হওয়ায় মেয়েটির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়।

প্রায় তিন ঘণ্টা পর বড় মনি কক্ষে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং সেই ছবি তুলে রাখেন।

ধর্ষণ শেষে কাউকে এ কথা জানাতে নিষেধ করেন এবং কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে প্রায়ই মেয়েটিকে ধর্ষণ করতেন বড় মনি।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার হওয়ার কারণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

এ কথা জানালে বড় মনি তাকে গর্ভপাত করার জন্য চাপ দিতে থাকেন।

কিন্তু সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনি মেয়েটিকে আদালত পাড়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে তুলে নিয়ে যান।

সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তাতে রাজি না হওয়ায় ওই বাসার একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় মেয়েটিকে।

পরে তাকে সেখানে আবার ধর্ষণ করেন বড় মনি। ধর্ষণের পর বড় মনির স্ত্রীর মারপিটে অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি।

পরে রাত ৩টার দিকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয় তাকে। তারপর থেকে মেয়েটিকে নানা হুমকি দেওয়া হতো।

শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করে ভুক্তভোগী। তথ্য সূত্র – বাংলানিউজ২৪.কম