উত্তর গাজায় লাখো উদ্বাস্তু ফিরছেন। অথচ তাদের ঘরবাড়ি বলে কিছুই নেই। ইসরায়েলি আগ্রাসনে সব ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। কিন্তু সেখানে ফিরেও স্বাধীনতার স্বাদ এখনই পাচ্ছেন না গাজাবাসী। বিশ্লেষকরা বলছেন, তাদের ইসরায়েলি বিধিনিষেধে দিন কাটাতে হতে পারে।
নেতানিয়াহুর দীর্ঘদিনের একজন সমালোচক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত অ্যালন পিনকাস বলেন, তাদের তাৎক্ষণিক বুঝতে হবে এটা আর পুনর্গঠন করা যাবে না। এখন প্রয়োজন গোড়া থেকে পুনর্নির্মাণ করা। এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পানযোগ্য পানি, খাবার ও ওষুধসামগ্রী সরবরাহ। বৃষ্টি ও শীতের মধ্যে সেখানে আশ্রয়ও খুব জরুরি। প্রার্থনা করি যেন যুদ্ধবিরতি চুক্তি বহাল থাকে এবং এটি দ্বিতীয় ধাপে গড়ায়। এখন সবাই নতুন সরকারের প্রতি অঙ্গীকার না করলে গাজার পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে না।
কাতারের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির উপসাগরীয় রাজনীতির অধ্যাপক লুসিয়ানো জাক্কারা বলেছেন, উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তন যে কোনো একটি বড় বিজয়। আমাদের এটা মনে রাখতে হবে যে, এই লোকেরা এমন একটি স্থানে ফিরে এসেছে, যা বহু মাস ধরে অবরুদ্ধ ছিল, যেটি স্পষ্টতই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সেখানে কোনো সরবরাহ নেই।
তিনি আরও বলেন, ধ্বংসাবশেষ অপসারণ বা পুনর্নির্মাণ করা ছাড়া সেখানে তাদের তাঁবুতে বসবাস করতে হবে। এখন গাজায় যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের জন্য দখলদার বাহিনী মানে ইসরায়েলের অনুমতি নিতে হবে।
উত্তর গাজায় ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা, এরপর কী?
গাজা খালি করতে চান ট্রাম্প, কোথায় যাবেন ফিলিস্তিনিরা
গাজার জনসংযোগ দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ১৫ মাসব্যাপী ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র দুই দিনের মাথায় গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরে এসেছেন ৩ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের কারণে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ এতদিন উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অবশেষে ৪৭০ দিন পর তারা নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে আসছেন।
এর আগে আলজাজিরার সংবাদদাতা জানিয়েছিলেন, উত্তর গাজায় ফিরতে বাধা দেওয়া হবে না ইসরায়েলের এমন ঘোষণার পর নেৎজারিম করিডোরের কাছে অপেক্ষারত হাজারো ফিলিস্তিনি আনন্দে ফেটে পড়ে। বাস্তুচ্যুতরা এই মুহূর্তটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করে। তাদের মতে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মতোই এটিও তাদের জন্য একটি বিজয়ের দিন।