চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহক টানতে জুড়ি নেই কোকাকোলার। বিশ্বের নামিদামি সব সেলিব্রেটিরা কাড়ি কাড়ি টাকার বিনিময়ে কোকাকোলার হয়ে প্রচার চালান। অথচ জনপ্রিয় এই পানীয়তে এবার মিলেছে উচ্চমাত্রায় রাসায়নিক। এমন খবরে হইচই পড়ে যাওয়ার পর বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে কোকাকোলা। এক ধাক্কায় কোকাকোলা এত পরিমাণ পণ্য বাজার থেকে তুলে নেওয়ায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়তে পারে।
সম্প্রতি কোকাকোলায় উচ্চমাত্রায় ক্লোরেট নামক রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এরপরই ইউরোপের কয়েকটি দেশ এই পানীয় বাজার থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। কোকাকোলা সোমবার জানায়, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে বেলজিয়াম, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, লুক্সেমবার্গ ও নেদারল্যান্ডসে উচ্চমাত্রার ক্লোরেট ধারণকারী ক্যান ও কাচের বোতলে কোকাকোলা পানীয় বিতরণ করা হয়েছে। পরে এক মাস নাগাদ ৫টি পণ্য লাইন ব্রিটেনে পাঠানো হয় এবং সেগুলো ইতোমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে।
সাধারণত পানি শোধন এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত ক্লোরিনভিত্তিক জীবাণুনাশক থেকে উৎপন্ন হয় ক্লোরেট। এই রাসায়নিক উচ্চমাত্রায় গ্রহণ করলে শিশু ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। কোকাকোলার আন্তর্জাতিক বোতলজাতকরণ এবং বিতরণ কার্যক্রমের বেলজিয়াম শাখা বলছে, ক্লোরেট থাকা পণ্যের মধ্যে রয়েছে কোক, ফ্যান্টা, স্প্রাইট, ট্রপিকো ও মিনিট মেইড ব্র্যান্ড। তবে কত সংখ্যক বোতল ও ক্যানজাত কোক-স্প্রাইট এ পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা জানাতে পারেনি কর্মকর্তারা।
এর আগে ২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অধিভুক্ত সংস্থা ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথরিটি (ইফসা) ক্লোরেট নিয়ে গবেষণা চালায়। তাতে দেখা যায়, খাবার কিংবা পানীয় প্রস্তুতের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মাত্রায় ক্লোরেট ব্যবহারে সমস্যা নেই। ক্লোরেট থাকা পণ্য বাজারজাত করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো গ্রাহকই এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। অবশ্য কোকাকালার ফরাসি শাখা বলছে, তারা স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে ক্লোরেটের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখেছে। তবে যে মাত্রায় এর উপস্থিতি রয়েছে তা ঝুঁকিপূর্ণ নয়।