ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারান্তরীণ থাকার পরে এবার দুদকের মামলায় ফাঁসলেন বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলম তালুকদার। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে তার স্ত্রীর নামে থাকা সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান,
শাহে আলম তালুকদার ক্ষমতার অপব্যবহার করার মাধ্যমে অবৈধভাবে এক কোটি ৭৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৭০ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেন। আরো অনেক তা নিজের দখলে রাখেন। নিজের ১২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে জমা ও উত্তোলনসহ মোট ২৫ কোটি ৬৪ লাখ ৩৩ হাজার ৭৭২ টাকার অবৈধ অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে শাহে আলমের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক জানান, শাহে আলম তালুকদারের স্ত্রী আতিয়া আলম মিলির ৫৫ লাখ ৭৫ হাজার ৯৯৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রতীয়মান হয়েছে। তার নামে আরো সম্পদ রয়েছে কি না, তা যাচাই এবং সম্পদের উৎসগুলোর সঠিকতা যাচাই করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (১) ধারা অনুযায়ী সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ আসনে নৌকার টিকিটে মো. শাহে আলম প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভূত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম আত্মগোপানে চলে যান। ২৭ আগস্ট থেকে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ১৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে আটক করে মারধরের পর গুলশান থানায় সোপর্দ করে বিক্ষুদ্ধ জনতা। গুলশান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী মো. নাইমুর রহমান হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি না হওয়া সত্ত্বেও অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর বিকালে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। আদালতে বিচারক মেহেদী হাসান তার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ড শেষে সেই থেকে সাবেক এ সংসদ সদস্য কারান্তরীণ রয়েছেন।