টাঙ্গাইল পৌরসভার হরেক রকমের অনিয়ম ও দুর্নীতি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। পৌরসভার ২৬ কর্মচারী নিয়োগে পাঁচ কোটি, হত দরিদ্রদের অনুদানের প্রায় সোয়া কোটি টাকাসহ প্রায় ১০ কোটি টাকার টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে টাঙ্গাইল পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অডিট টিমকে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা।
প্রধান প্রধান অভিযোগ –
পৌরসভার একটি বিশ^স্ত সূত্র জানায়, পৌরসভায় ২৬ জন কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, অনিয়মসহ অন্তত পাঁচ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি, হতদরীদ্রদের আর্থিক অনুদানের টাকা থেকে প্রায় সোয়া কোটি টাকা আত্মসাৎ, পিপিআর অনুসরণ না করে স্টেশনারি মালামাল ক্রয়ে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে হিসাব নিরীক্ষক কর্মকর্তারা। এছাড়াও আরো অন্তত ৩০টি খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলে নিশ্চিত করেছেন পৌরসভার বিশ^স্ত সূত্রটি।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য –
পৌরসভার একটি বিশ^স্ত সূত্র জানায়, গত ২ মার্চ টাঙ্গাইল পৌরসভায় অডিট বা হিসাব নিরীক্ষা করতে আসেন হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের একটি দল। তারা টাঙ্গাইল পৌরসভার ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের কিছু পূর্ব নির্ধারিত (গণমাধ্যমে প্রকাশিত) বিষয়ে অডিটে অন্তত ৩০টি খাতে দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়ম পায় দলটি। যাতে দেখা যায় অন্তত ১০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। যা পৌরসভার তৎকালীন পৌর মেয়র ও তার অনুগতরা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করেন।
সূত্র আরো জানান, সাবেক পৌর মেয়রের সিরাজুল হক আলমগীরের নির্দেশে ২০ লক্ষ টাকা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা। পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্নেওয়াজ পারভীনের নের্তৃত্বে ৫ মার্চ বিকেলে পৌরসভার সভা কক্ষে এক জরুরী সভা করেন ওই ২৬ জনসহ দুর্নীতির সাথে যুক্ত অন্যান্যরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় প্রত্যেকে তাদের এক দিনের বেতনের টাকা দিয়ে এই ২০ লাখ টাকা একত্রিত করে অডিট কর্মকর্তাদের দেয়া হবে।
নাম প্রকাশ করার না শর্তে একাধিক পৌর কর্মকর্তা বলেন, সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির মূল হোতা হলেন পৌরসভার সাবেক মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর গত ৫ আগষ্টের পর থেকেই তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।
পৌর নির্বাহীর বক্তব্য –
এবিষয়ে যখন টাঙ্গাইল পৌরসভার সচিব শাহনেওয়াজ পারভীনের কাছে জানতে চেয়ে তার কক্ষে যাওয়া হয়, তখন তিনি কক্ষে ছিলেন না। পরে তাকে পৌরসভার সভা কক্ষে পাওয়া যায়। যেখানে তিনি ওই সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বৈঠক করছিলেনে। সেখানে গেলে কক্ষের সবাই তঠস্থ হয়ে যান। সেসময় শাহনেওয়াজ পারভীন এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
প্রতিক্রিয়া –
এ বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীসহ পৌরবাসী জানার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। আজ বুধবার বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাংবাদিক বিষয়টি খোঁজখবর নিতে পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাথে কথা বলেন।
এদিকে অডিটে ২৬ জন কর্মচারী নিয়োগে ৫ কোটি টাকার ঘুষ লেনদেন ও কোটি কোটি টাকার অডিট আপত্তি ফাঁস হলে পৌরসভার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।











