টাঙ্গাইল পৌরসভার তিন প্রকৌশলীর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে তারা চাকুরীতে পূণর্বহাল হলেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় অধীন স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর শাখা-১ এর সচিব মো. রেজাউল মাকসুদ জাহেদী কর্তৃক ১৬ এপ্রিল স্বাক্ষরিত ৪৬.০০.০০০০.০৬৩.২৭.০১৪.২৩.২৬৭/১, ৪৬.০০.০০০০.০৬৩.২৭.০১৫.২৩.২৬৮/১ ও ৪৬.০০.০০০০.০৬৩.২৭.০১৬.২৩.২৬৯/১ স্মারক মূলে তাদের চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার পূর্বক প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়। প্রজ্ঞাপনে তাদের লঘু দণ্ডে দণ্ডিত করে চাকুরীতে পূণর্বহালের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সাময়িক বরখাস্তের আদেশ থেকে অবমুক্ত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব গুহ ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিন্নাতুল হক। এই প্রজ্ঞাপনে তাদের দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণের উল্লেখ থাকলেও দুর্নীতির কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও এই প্রজ্ঞাপনে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারের অবহেলা, নির্মাণ কাজের সংশ্লিষ্ট তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের কোন শাস্তি প্রদান না করার বিষ্ময় প্রকাশ করেন অনেকে।
ঘটনা –
জানা যায়, টাঙ্গাইল শহরের বেড়াডোমা ব্রিজের দায়িত্ব পালনকালে নির্মাণাধীন অবস্থায় ঢালাইকাজের পুর্বে সেন্টারিং এ ড্রইং ও ডিজাইন অনুসারে না করে গাছের বল্লী ও বাঁশের খুটি ব্যবহারে ঠিকাদারকে শুধু চিঠির মাধ্যমে নিষেধ করেন। ঢালাই কাজ বন্ধ না করে এবং ঢালাইয়ের সময় উপস্থিত না থাকায় চরম দায়িত্বে অবহেলা করেন পৌর প্রকৌশলী শিব্বির আহম্মেদ আজমী। একারণে টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৯৯২ সালের বিধি ৪০ এর উপ বিধি (ক) ও (খ) অনুয়ায়ী দায়িত্ব পালনে অবহেলার জন্য ওই প্রকৌশলীর নামে বিভাগীয় মামলা (নং-৪/২০২৩) হয়। পরে মামলাটি ২০২৩ সালের ১১ জুলাই শুনানীতে অভিযোগ প্রমানিত হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হয় এবং তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
প্রজ্ঞাপন –
পরে বিভাগীয় কর্মকর্তা টাঙ্গাইল পৌরসভার বরখাস্তকৃত ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ, কারণ দর্শানোর জবাব, বিভাগীয় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনাক্রমে বর্ণিত দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় পৌরসভার কর্মচারী চাকুরি বিধিমালা ১৯৯২ এর বিধি ৪০ এর উপ বিধি ক’ ও খ; অনুযায়ী দায়িত্বে¡ অবহেলা এবং অসদাচারনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে পৌরসভার কর্মচারী চাকুরি বিধিমালা ১৯৯২ এর বিধি ৪১ এর উপ-বিধি (ই) অনুযায়ী আদেশ জারির তারিখ হতে ০১ (এক) বছরের জন্য বেতন বর্ধন স্থগিত রাখার লঘু দন্ড প্রদান করেন এবং বরখাস্তকালীন সময় সাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য করে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে বহাল রাখেন।
দায়মুক্তদের বক্তব্য –
সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পাওয়া টাঙ্গাইল পৌরভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব গুহ ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিন্নাতুল হক। এসময় তারা বলেন, তৎকালীন সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর সরাসরি এই কাজটি নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাদের রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে আমরা খুবই অসহায় ছিলাম।
পৌর প্রশাসকের বক্তব্য –
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রসাশক মো. শিহাব রায়হান জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে পৌরসভার তিন জন প্রকৌশলীর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে, বিষয়টি শুনেছি। তবে অফিসিয়ালভাবে তিনি কোন চিঠি বা কাগজপত্র পাননি।