ফরিদপুরে মায়ের কোল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাবার হাত ধরে বিক্রি হয়ে যাওয়া সেই শিশুটিকে উদ্ধার করে আদালতের নির্দেশে মায়ের জিম্মায় রাখা হয়েছে। আগামী ২ জুন চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত শিশুটি তার মায়ের কাছেই থাকবে।
সোমবার (১২ মে) বিকেলে ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি এই আদেশ দেন।
এর আগে, গত শনিবার বিকেলে র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি দল শিশুটিকে উদ্ধার করে নগরকান্দা থানায় হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে সোমবার শিশুটিকে হাজির করা হলে এই আদেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, মামলার বাদী পপি বেগম দীর্ঘদিন ধরে সন্তান ফিরে পাওয়ার জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। আদালতের আদেশে র্যাব শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং পুলিশের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করে। আদালত শিশুটিকে তার মায়ের জিম্মায় দেন। আইনজীবী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, চূড়ান্ত রায়েও ন্যায়বিচার প্রতিফলিত হবে।
শিশুটির মা পপি বেগম আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “আমার কলিজার টুকরাকে ফিরে পেয়েছি। আমি যেন আর হয়রানির শিকার না হই। আদালতের কাছে আমার প্রার্থনা—আমার সন্তান যেন চিরদিন আমার কাছেই থাকে।”
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি জানান, সোমবার মামলার নির্ধারিত তারিখ না থাকলেও অভিযুক্তের নামে সার্স ওয়ারেন্ট থাকায় শিশুটিকে আদালতে হাজির করা হয়। শিশুটি দুধের শিশু হওয়ায় মানবিক বিবেচনায় তাকে মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে সন্তান ফিরে পেতে ফরিদপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন পপি বেগম। মামলায় উল্লেখ করা হয়, তার শিশু কন্যাকে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়েছে। আদালত চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল সার্স ওয়ারেন্ট জারি করে শিশুটিকে উদ্ধারের নির্দেশ দেয়।
প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের পপি বেগমের সঙ্গে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামপাশা গ্রামের কাইয়ুম বিশ্বাসের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক কলহ ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। পাঁচ মাস আগে তাদের মধ্যে তালাক হয়। এরপরই পপি বেগমের অজান্তে তাদের শিশুকন্যাকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বাবার বিরুদ্ধে।