প্রিয় মাতৃভূমি ও প্রিয়জনদের ছেড়ে অনেকেই জীবিকার তাগিদে বিদেশে পাড়ি জমান। তবে ভিনদেশে নতুন জীবন শুরু করা সহজ নয়। শুরুর দিকে ভাষাগত সীমাবদ্ধতা, নতুন আবহাওয়া, সংস্কৃতি ও খাবারের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সময় লেগে যায়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশের আইন সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে অনেক সময় প্রবাসীদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
এ কারণে প্রবাসে নিরাপদ, সম্মানজনক এবং সাফল্যময় জীবন গড়তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। নিচে তুলে ধরা হলো কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ—
১. বৈধ কাগজপত্র সঙ্গে রাখা:
বিদেশে চলাফেরা ও কাজ করার সময় পাসপোর্ট, ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিটসহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হালনাগাদ ও বৈধ থাকা উচিত। এগুলোর মেয়াদ নিয়মিত যাচাই করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নবায়ন করতে হবে। অস্থায়ী বা ‘হুরুব’ পরিস্থিতি এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. নিয়োগচুক্তি ভালোভাবে পড়া:
চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে নিয়োগকর্তার সঙ্গে চুক্তি ভালোভাবে পড়ে বোঝা প্রয়োজন। বেতন, কাজের সময় ও ছুটির নীতিমালা সংক্রান্ত তথ্য লিখিতভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। প্রতারণা এড়াতে রিক্রুটিং এজেন্সির রেজিস্ট্রেশন ও অনুমোদন যাচাই করা আবশ্যক।
৩. দেশের দূতাবাসের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা:
প্রবাসজীবনে যেকোনো জটিল পরিস্থিতিতে সহায়তা পাওয়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা। স্থানীয় দূতাবাস বা কনস্যুলেটের হটলাইন নম্বর সংরক্ষণ করা উচিত এবং প্রয়োজনে দ্রুত যোগাযোগ করা জরুরি। প্রয়োজনে অভিবাসী কল্যাণ ডেস্ক বা প্রবাসী কলসেন্টারের সেবা নেওয়া যেতে পারে।
৪. ভদ্র ও আইনানুগ জীবনযাপন:
প্রবাসে সফল হতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশের আইন সম্পর্কে ধারণা থাকা ও তা মেনে চলা অপরিহার্য। ভিসার সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে এবং স্থানীয়দের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল আচরণ করতে হবে।
৫. ভালো কমিউনিটির সঙ্গে যুক্ত থাকা:
দেশীয় কমিউনিটির সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক সহায়তা পাওয়া যায়। তাছাড়া দেশীয় উৎসব ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকলে প্রবাসজীবন কিছুটা হলেও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
প্রবাসে একটি সুন্দর ও সুরক্ষিত জীবন গড়তে হলে সচেতনতা, নিয়ম মেনে চলা এবং সঠিক তথ্য জানা—এই তিনটি বিষয়ের বিকল্প নেই। প্রস্তুত থাকলে যেকোনো বিপদও সহজে মোকাবিলা করা সম্ভব।