সারা দেশে গত এক মাসে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে ৪৮ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৯ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে গ্রেপ্তার হয়েছে ১ হাজার ৫৬০ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে ১০ মে, এদিন মোট ২ হাজার ৭৭১ জনকে আটক করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে গ্রেপ্তারের এই সংখ্যা অপারেশন ডেভিল হান্ট এর সময়কার গড় গ্রেপ্তারের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। ওই বিশেষ অভিযানে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৩৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং পুলিশের নিয়মিত অভিযানের তৎপরতা বৃদ্ধির কারণেই এ সংখ্যা বেড়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (অপারেশন) শাহজাদা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “পুলিশের সক্রিয়তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিনের গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেড়েছে। নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কিছু সদস্যও সক্রিয় হওয়ায় তাদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।”
গত এক মাসে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও গোয়েন্দা বিভাগ গ্রেপ্তার করেছে আওয়ামী লীগের অন্তত ১৭৫ জন নেতাকর্মীকে, যাদের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্যও।
তারা হলেন:
মমতাজ বেগম (মানিকগঞ্জ-২)
জেবুন্নেসা আফরোজ (বরিশাল-৫)
কাজী মনিরুল ইসলাম মনু (ঢাকা-৫)
জাফর আলম (কক্সবাজার-১)
আমিরুল আলম মিলন (বাগেরহাট-৪)
সেলিনা ইসলাম (সংরক্ষিত আসন-৪৯, কুমিল্লা)
শামীমা আখতার খানম ওরফে শামীমা শাহরিয়ার (সংরক্ষিত আসন-২১, সুনামগঞ্জ)
এছাড়া ৯ মে নিজ বাসা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভিকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
অন্যদিকে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও চলেছে অভিযান। ১৮ মে গুলিস্তানে ঝটিকা মিছিল থেকে ১১ জন, ১৯ মে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৬ জন, এবং রায়েরবাজার এলাকায় চালানো পৃথক অভিযানে ৪৪ জন আটক করা হয়। তাদের মধ্যে মাদক চোরাকারবারি, ছিনতাইকারী ও ওয়ারেন্টভুক্ত গ্যাং সদস্যরাও রয়েছে।
তবে গ্রেপ্তারের সংখ্যা বাড়লেও কারাগারে বন্দিদের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন) জান্নাত-উল-ফরহাদ আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “নতুন গ্রেপ্তার ও জামিন পাওয়া আসামিদের ভারসাম্য বজায় থাকায় কারাগারের বন্দিসংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে।”