২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে “প্রত্যাশার তুলনায় হতাশাজনক” এবং “ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক” বলে মন্তব্য করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, “এই বাজেট কাঠামোতে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সুস্পষ্ট কোনো কৌশল উপস্থাপন করা হয়নি। শুধু খাতভিত্তিক কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সামগ্রিক কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ে না। মনে হচ্ছে, আগের বাজেট কাঠামোতেই সামান্য বাড়ানো-কমানোর চেষ্টা হয়েছে।”
বিশেষ করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়মিত করদাতাদের নৈতিকতাকে আঘাত করে এবং বৈষম্য তৈরি করে। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে না।”
ড. ফাহমিদা আরও বলেন, “আয়কর আইন ২০২৩-এর আওতায় বিশেষ হারে কর দিয়ে আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে অঘোষিত অর্থ বৈধ করার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেটি সিপিডি বরাবরই বিরোধিতা করে এসেছে। এই ব্যবস্থা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করে এবং কর নীতির প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি করে।”
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন অবৈধ অর্থ ও পাচার রোধে কাজ করছে, তখন বাজেটে এমন সুবিধা রাখা সাধারণ মানুষের মাঝে ভুল বার্তা পাঠায়। এটি বৈষম্যের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায় এবং বৈধভাবে আয় করা মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস করে।”
বাজেটের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “বাজেটে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে নেওয়া পদক্ষেপগুলো সেই দর্শনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জুলাই আন্দোলনের যে চেতনা, সেই বৈষম্যবিরোধী মূলনীতির সঙ্গে এটি সাংঘর্ষিক।”
উল্লেখ্য, সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ জাতীয় সংসদে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন।
সিপিডি’র মতে, বাজেটে যেসব খাত চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে কাঠামোগত সংস্কারের অভাব রয়েছে এবং কর প্রশাসনের সক্ষমতা বাড়িয়ে কর আদায় ব্যবস্থার কার্যকর সংস্কারে গুরুত্ব না দেওয়া হলে বাজেট বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।