দ্রুত সময়ের মধ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তবে তার আগে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে তৈরি হওয়া “জঞ্জাল” দূর করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন তিনি।
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “নির্বাচন গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা পরিবর্তনের একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। কিন্তু জনগণ দীর্ঘদিন সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর নতুন বাংলাদেশ গঠনের যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ হয়নি। তাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আগে সিস্টেমের মধ্যে গড়ে ওঠা দুর্নীতি ও অরাজকতা—এই ‘জঞ্জাল’ দূর করতে হবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন, তাই তারা কোনো নির্বাচন বা রাজনৈতিক দলকে সাংগঠনিকভাবে সমর্থন দেবে না। তবে ব্যক্তিগতভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার হেফাজতের নেতাকর্মীদের রয়েছে।
তিনি বলেন, “দেশবাসী ও মুসলমানদের প্রতি আমাদের আহ্বান—যারা আল্লাহ, কোরআন এবং রাসুল (সা.)-এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাদের যেন ক্ষমতায় না আনা হয়। যারা ইসলামের পক্ষে, তাদেরকেই বেছে নেবে তৌহিদি জনতা।”
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি অভিযোগ করেন, “রাতে বিদ্যুৎ, পানি ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করে আমাদের ঘিরে ফেলা হয়। এরপর রাত ১২টার পর চারদিক থেকে নৃশংস হামলা চালানো হয়। প্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার গুলি ছোড়া হয়। অসংখ্য মানুষ আহত ও শহীদ হন, অনেকে নিখোঁজ।”
সরকারের বিরুদ্ধে “গুম ও হত্যার” অভিযোগ এনে তিনি বলেন, হেফাজতের হাজারো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৩০০-এর বেশি মামলা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা শহরের ২০টি মামলা সরকার প্রত্যাহার করেছে। বাকি মামলাগুলোও দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “যতদিন পর্যন্ত এই অন্যায়ের জঞ্জাল পরিষ্কার না হবে, ততদিন সত্যিকারের সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”