মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অমান্য করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহেড়া আনন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহিনুল ইসলামের নির্দেশে সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের বেতন প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ফি’র সাথে উঠানো হয়। সরিজমিনে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া য়ায়।
মঙ্গলবার বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, দশম শ্রেনির শিক্ষার্থীদের প্রি-টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতনের টাকা আদায় করতে দেখা যায়। রশিদে পরীক্ষার ফি বাবদ ৫৫০ টাকা, ৬ মাসের বিদ্যুত বিল বাবদ ৬০ টাকা ও বকেয়া বাবদ জানুয়ারি মাসের বেতন ৩০০ টাকা আদায় করছেন।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও বানিজ্যিক শাখায় শিক্ষার্থী রয়েছে ৫১ জন। এর মধ্যে উপবৃত্তি পান ২৩ জন। পরীক্ষার ফি’ এর সাথে এক মাসের বেতন ৩০০ টাকা আদায় করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আমরা উপবৃত্তি পাই। আমাদের কাছ থেকে কেরানী ৯১০ টাকা চায়। পরে আমরা প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে আমরা কয়েকজন উপবৃত্তির কথা জানাই। প্রধান শিক্ষক আমাদের বলেন টাকা না দিলে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করা যাবে না।
এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, আমার স্বামীর সামান্য আয়ের টাকা দিয়ে কোন রকমে আমার সংসার চলে। আমার ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ে, সে উপবৃত্তি পায়। সেই টাকা দিয়েই তার পড়ালেখা চালানো হয়। পরীক্ষার কথা বলে ফি চাইছে, ফি দিতে গেলে এক মাসের বেতনের টাকা চায়। পরে আমি অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার করে বিকালে নিয়ে যাই। আমাকে আজ (মঙ্গলবার) আবারও টাকা নিয়ে যেতে বলে। আমার পক্ষে এই টাকা ব্যবস্থা করতে খুব কষ্ট হইছে। আমার ছেলে উপবৃত্তি পায়, তাহলে কেন তারা আমার কাছ থেকে বেতনের টাকা চাইবে। আমি এই স্যারের বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহিনুল ইসলাম প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে কেরানীকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করলে কেরানী সত্য কথা বলে দেয়। পরে প্রধান শিক্ষক আর কথা বলতে রাজি হয়নি।
টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা বিষয়টি জানা মাত্রই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হায়দারকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ওই বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষককে ফোন করেছিলাম, তিনি আমার কাছে বেতন নেয়ার কথা অস্বীকার করে। তিনি যদি বেতন নিয়ে থাকেন, তাহলে ওই শিক্ষককে কারন দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। পরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।