২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া কোটা বাতিলের দাবির আন্দোলন আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করেছে। গত ১০ তারিখ থেকে শিক্ষার্থীরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সকাল-সন্ধ্যা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন। এরই মধ্যে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশের পরও শিক্ষার্থীরা নির্বাহী আদেশে দ্রুত সংকট সমাধানের দাবি জানিয়ে রাস্তায়ই অবস্থান করছেন।
চতুর্থ দিনের মতো রাজধানীর ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। শাহবাগে শিক্ষার্থীদের মিছিল থামাতে পুলিশ ব্যারিকেড দিলেও তা ভেঙে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে দেন তারা। শাহবাগ, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর, কাওরানবাজার, ফার্মগেট থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এলাকাগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শাহবাগে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা দিনভর প্রতিবাদী গান, কবিতা ও স্লোগান তুলে ধরেন। আন্দোলনকারীরা জানান, তাদের দাবি পরিষ্কার—কোটা থাকতে পারে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ, এর বেশি নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব মোড়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রায় সাহেব বাজার ও বংশাল থেকে জিরো পয়েন্ট অবরোধ করেন। রামপুরা, মহাখালী, মৎস ভবন ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতেও শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। ফলে চানখারপুল, জিরো পয়েন্টসহ পুরান ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ে। রেলপথও অবরোধ করা হয় বিভিন্ন স্থানে।
সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘প্রহসন’ বলে উল্লেখ করে ক্লাসে ফিরে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন, চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
রাজধানীর বাইরে আন্দোলন আরও ছড়িয়ে পড়েছে। চট্টগ্রামে দিনভর সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেছেন। রাজশাহীতে সিনেট ভবনের সামনে এবং রংপুরে বিভিন্ন স্থানে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছড়িয়ে পড়া এ আন্দোলন এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা একক দাবি ও একক কণ্ঠে কোটা বাতিলের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন—সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলনকে আরও বেগবান করছেন।