রাজশাহীর দুর্গাপুরে কাঁচা মরিচের বাজার এখন চাষিদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে। অল্প জমিতে মরিচ চাষ করেও চাষিরা লাখ টাকার আয় করছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচ ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা দীর্ঘ কয়েক বছর পর এমন দাম পেলেন চাষিরা।
চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরুতে অতিরিক্ত গরম ও পরে অতিবৃষ্টির কারণে অধিকাংশ মরিচগাছ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমে দাম বেড়ে গেছে। তবে নতুন মরিচ বাজারে এলে দাম কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করছেন তারা।
দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৪২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। কিন্তু অতি বৃষ্টি ও মড়ক রোগে তিন ভাগের এক ভাগ জমির মরিচগাছই টিকে নেই।
বহরমপুর গ্রামের চাষি আলম জানান, ১৬ কাঠা জমিতে মরিচ রোপণ করলেও অতিবৃষ্টিতে ১০ কাঠা জমির গাছ মারা গেছে। যে জমি থেকে সপ্তাহে ২০০ কেজি মরিচ পাওয়ার কথা, সেখানে ৪-৫ কেজি মরিচ মিলছে। তিনি বলেন, দাম বেশি হলেও উৎপাদন কম হওয়ায় খরচ উঠবে না।
গগনবাড়িয়া গ্রামের চাষি মকবুল হোসেন বলেন, ‘‘কখনো ২০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি করতে হয়, তখন কেউ খোঁজ নেয় না। এখন একটু দাম বাড়লেই সবাই অস্থির হয়ে যায়। কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম নির্ধারণ করলে চাষি, ক্রেতা সবারই উপকার হবে।’’
চাষি রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি ১০ কাঠা জমির মরিচ শনিবার দুর্গাপুর বাজারে ২৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন, এতে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখছেন তিনি।
সিংগা বাজারের সবজি বিক্রেতা মাসুম বলেন, হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি অনেক কমে গেছে। আগে দিনে গড়ে ৩০-৩৫ কেজি মরিচ বিক্রি হতো, এখন ৫ কেজিও বিক্রি হচ্ছে না।
দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবনী বলেন, ‘‘অতিবৃষ্টিতে মরিচগাছ মারা যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ কম। তাই দাম বেশি, এতে কিছুটা হলেও চাষিরা লাভবান হবেন। আমরা চাষিদের পরামর্শ ও উৎসাহ দিচ্ছি, যাতে তারা মরিচ উৎপাদনে আগ্রহী হন।’’