টাঙ্গাইলের সখীপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোটি টাকার সরকারি জমি দীর্ঘদিন ধরে বেদখল হয়ে আছে। সখীপুর পৌর তালতলা চত্বরসংলগ্ন ৫০ শতাংশ জমিতে দুটি বীজাগার স্থাপনা ও একটি আবাসিক ভবন থাকলেও সবই এখন পরিত্যক্ত।
জানা গেছে, ১৯৬১ সালে সাতজন ব্যক্তি ১৯৯২ নম্বর প্রত্যর্পণ দলিলের ভিত্তিতে এই জমি দান করেছিলেন সরকারি কৃষি বীজাগার নির্মাণের জন্য। একসময়ে এ জমিতে বীজ সংরক্ষণাগার, থানা ও ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় ছিল।
কিন্তু ধীরে ধীরে পুরো খোলা মাঠ দখল হয়ে গেছে। এখন সেখানে গড়ে উঠেছে প্রায় ৪০টি অবৈধ দোকান। ফলমূল, চা-পান, মনিহারি, জুতা, কাপড়সহ নানা পণ্যের দোকান থেকে প্রতি বছর ভাড়া আদায় করছেন হাটের ইজারাদার ও জমির মালিকানা দাবিদাররা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বীজাগারের ৫০ শতাংশ জমির মধ্যে ২০০৮ সালে একাধিক ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ৩ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। পরে কৃষি গুদামঘরের ১০৬ নম্বর দাগের জমিতে তিনতলা ভবন নির্মাণ করে দখল করে নেন মুক্তিযোদ্ধারা।
দীর্ঘদিন ধরে এই জমির প্রকৃত মালিক সখীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হলেও দখলদারিত্ব ঠেকাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ১০৬ নম্বর দাগের জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। সঠিক মালিকানা চিহ্নিত করে দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দাতাদের উত্তরসূরিরা দাবি করেছেন, দলিলের শর্ত অনুযায়ী সরকার জমি ব্যবহার না করায় জমির মালিকানা তাদের। যদিও আদালতে তাদের দাবি খারিজ হয়েছে এবং আপিল বিচারাধীন রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত এই কোটি টাকার সরকারি জমি দখলমুক্ত করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমে ব্যবহার না করলে এটি পুরোপুরি অবৈধ দখলে চলে যাবে।