শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য প্রস্তাবিত ‘৩৬ জুলাই’ নামক একটি গৃহায়ন প্রকল্পে অস্বাভাবিক ব্যয়ের তথ্য উঠে এসেছে প্রাথমিক তদন্তে। বিভিন্ন উপাদানে প্রকৃত মূল্যের তুলনায় ৩ থেকে ৪৫ গুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে, যা দুর্নীতির আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
উদাহরণস্বরূপ, যেখানে একটি আরসিসি পিলারের প্রকৃত বাজারমূল্য ৯০০ টাকা, সেখানে প্রকল্পে সেটির মূল্য দেখানো হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। ২৫ লাখ টাকার লিফটের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৯২ লাখ টাকা, ১২ লাখ টাকার সাবস্টেশনের খরচ দেখানো হয়েছে ৬৩ লাখ টাকা এবং ৯৫ হাজার টাকার পানির পাম্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা।
প্রকল্পের প্রতিটি স্তরে অস্বাভাবিক ব্যয়ের এমন ছড়াছড়িতে আজ একনেক সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হচ্ছে। ৭৬১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এ প্রকল্পে ৮ শতাধিক ফ্ল্যাট বরাদ্দের পরিকল্পনা রয়েছে। এটি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এখন পর্যন্ত প্রকল্পের জন্য কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা, মাস্টারপ্ল্যান বা স্থাপত্য নকশা তৈরি করা হয়নি। গত ১৬ জুন পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। সভায় উপস্থিত এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, “প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে স্পষ্ট নির্দেশিকা, পরিবেশগত প্রভাব বিশ্লেষণ এবং উপকারভোগীদের তালিকা থাকা বাধ্যতামূলক, কিন্তু এখানে সেসবের অভাব রয়েছে।”
কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ দাবি করেছেন, প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের চাপেই এ ভুলগুলো হয়েছে। তবে প্রকল্প অনুমোদনের আগে ব্যয়ের যৌক্তিকতা যাচাই না করেই কীভাবে এই ব্যয় অনুমোদিত হলো—সে বিষয়ে কেউই নির্দিষ্ট করে কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের খসড়া প্রোফাইল (ডিপিপি) এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এবং এটি দ্রুত চূড়ান্ত হতে পারে। আজ দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই দুর্নীতির অভিযোগ ও প্রকল্পের নানা অনিয়মের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।