ফুটপাথের পাশে ছোট্ট একটি ভাতের হোটেল। সারি সারি গরম খাবার সাজানো থাকলেও মালিক মিজান একাই সব সামলান, কর্মী নেই। রান্না থেকে শুরু করে খাবার পরিবেশন—সব কিছু মিজানের একার কাজ। কাস্টমাররা নিজের মতো খাবার নিয়ে খাচ্ছেন, টাকা দিচ্ছেন প্লাস্টিকের একটি কৌটায়।
কেউ কম দিচ্ছেন, কেউ দিচ্ছেন না, আবার কারো কাছে টাকা নেই। এভাবেই চলে আসছিল মিজানের দোকান। হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর হোটেলের ব্যাপক জনপ্রিয়তা বাড়লেও, ব্যবসার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে খারাপ হয়েছে।
ভাইরাল হওয়ার পর থেকে মিজানের বিক্রি কমে গেছে। অনেক গ্রাহক বেশি খাবার নিয়ে কম টাকা দিচ্ছেন কিংবা একদমই টাকা দিচ্ছেন না। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোটেল বন্ধের চাপও বাড়ছে।
মিজান বলেন, “ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিড়ের কারণে রান্নায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে আমার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনের চাপ আমাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে।”
পূর্বে মিজান দিনে প্রায় ১২০০ টাকার খাবার বিক্রি করতেন, এখন তা কমে মাত্র ৫০০-৬০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। “মানুষ আমার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে, বেশি খেয়ে কম টাকা দিচ্ছে, আবার কেউ দিচ্ছে না,” বললেন তিনি।
মিজান ভেঙে পড়ে বলেন, “আমি জানতাম না ভাইরাল হওয়া কী, জানলে ক্যামেরার সামনে যেতাম না। অনেকেই এসে গুলোশালা করে খাবার নিয়ে যায়, আমি কিছু বলতে পারি না। আমার ব্যবসা এখন অনেকটা আউলা ঝাউলা অবস্থা।”
প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোটেল সরানোর অনুরোধ এসেছে। মিজান বলেন, “পুলিশ এসে আমাকে না করার পর আমি উল্টাপাল্টা কথা বলেছি। অনুরোধ আমার কথা নিয়ে কেউ রাগ না করুক।”
তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, “মাগরিবের আগে বাসায় চলে যেতে হয়, স্ত্রীও এখন আমাকে দেখতে পারে না। ব্যবসার অবস্থা খারাপ, আমি অসহায় বোধ করছি। সবাই আমার ব্যবসাকে নষ্ট না করার জন্য অনুরোধ জানাই।”