টাঙ্গাইলের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরীতে গোপনে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেয়া শিক্ষার্থীরা পুনর্মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। সোমবার ১৮ আগস্ট বিকেল চার দিকে অভিভাবকদের সাথে সম্প্রতি ভর্তি হওয়া কোচিং সেন্টারে অধ্যায়নরত ওই শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। সুবিধাবঞ্চিত অভিভাবকদের অভিযোগ পুনর্মূল্যায়ন পরীক্ষা শেষে আরো কয়েকজন কোচিং ও বেসরকারি বিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীদের সম্প্রতি ভর্তি করাসহ পঞ্চম শ্রেণীর সরকারি বৃত্তিতে সুযোগ করে দেয়ার জন্য আবারও গোপনে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে পরীক্ষা শেষে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রতিবেদক সহ কয়েকজন সাংবাদিক যাওয়ায় নানাভাবে বিরক্তি প্রকাশ করেন উপস্থিত সহকারী শিক্ষকরা। এরপরও সাংবাদিকদের পঞ্চম শ্রেণী অধ্যায়ন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও দ্বিতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত জানান তসলিমা জাহান। তবে বিতর্কিত শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি।
প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নেয়া শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার সময় প্রধান শিক্ষক তসলিমা জাহানের উপস্থিতিতেই সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিও ধারণ কেন করলেন এমন প্রশ্নের জবাব দেননি সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার ও প্রধান শিক্ষক তসলিমা জাহান।
তবে বিদ্যালয় ছুটির সময় সাংবাদিকরা কেন মহিলা শিক্ষকদের কাছে আসবেন এমন মন্তব্য করেন উপস্থিত শিক্ষকরা। এর আগে বিদ্যালয় লাইব্রেরীতে গোপনে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দিল সাত শিক্ষার্থী, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করায় টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বিভাগসহ মহলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা। সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি সংবাদের বেশ কিছু সত্যতাসহ একদিনে একাধিক শিক্ষার্থী ভর্তির তথ্য পেয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রধান শিক্ষক যা বলেন –
মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক তসলিমা জাহান বলেন, বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ২১০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পুনর্মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে ২০২ জন। বিতর্ক উঠা শিক্ষার্থীদের পুনর্মূল্যায়ন পরীক্ষায় কিভাবে অংশ নিল এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান প্রধান শিক্ষক।
শিক্ষা কর্মকর্তার মন্তব্য –
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিন জানান, তদন্তকারী দল প্রকাশিত সংবাদে উত্থাপিত তথ্যের বেশ কিছু সত্যতা পেয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটি ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন অধিদপ্তরে পাঠাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদকর্মীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ায় শিক্ষকদের বিরক্তি আর সরকারি শিক্ষক আয়েশা আক্তারের ভিডিও কেন করলেন এমন এমন প্রশ্ন নিয়ে তিনি বলেন, সংবাদের প্রয়োজনে সাংবাদিকরা অবাধে যাবেন ও তথ্য উদঘাটন করবেন। এখানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি কোন সুযোগ নেই। সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার কেন ভিডিও করেছেন বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।