প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গোপনে লাইব্রেরী কক্ষে নেয়া হলো কোচিং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা প্রকাশিত সংবাদের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় সরকারি ছুটির দিনে ও বিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে প্রায় শতাধিক অভিভাবককে নিয়ে তদন্ত করার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জাকারিয়া হায়দার এর বিরুদ্ধে।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিনটি মোটর সাইকেল নিয়ে শিক্ষা বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা “মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লাইব্রেরী কক্ষে গোপনে নেয়া হলো কোচিং সেন্টারের সাত শিক্ষার্থীর প্রথম সাময়িক পরীক্ষা” বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ওই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
তদন্তে গোপনে প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় অংশ নেয়া ও সম্প্রতি ভর্তি করা পঞ্চম শ্রেণীর ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি বঞ্চিত করাসহ কোচিং সেন্টারে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের গোপনে বিদ্যালয়ে ভর্তি দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারি শিক্ষকদের একটি সিন্ডিকেটের ধারাবাহিক এমন অপকর্মের প্রতিবাদ করা অভিভাবকদের না ডাকারও অভিযোগ রয়েছে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তদন্ত কর্মকর্তা জাকারিয়া হায়দারের পরামর্শে অভিযোগ উঠা তথ্য সত্য নয় মর্মে কর্মরত সহকারি শিক্ষক অভিভাবকদের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক নিশ্চিত করেছেন।
অভিভাবক কানিজ রওশন বলেন, সরকারি ছুটির দিনে গোপনে তদন্ত কার্যক্রম চালানো হয়েছে। তদন্তের ব্যাপারেও শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আজকে সকালে বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারি শিক্ষক স্বপন আমাকে, অভিভাবক মিটিং আছে বলে জানায়। বন্ধের দিন সকল অভিভাবককে ছাড়া কেন মিটিং ডাকা হলো এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি ওই শিক্ষক।
তিনি জানান, সম্প্রতি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূর্নীতি তুলে ধরায় অভিভাবককে ভয় ভীতি দেখানো প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছি। এছাড়া দূর্নীতির তথ্য সাংবাদিকদের দেয়া ও সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় অধ্যায়নরত দুই মেয়েসহ আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ কারণে আমি দুই মেয়ে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতা ভুগছি। নিরাপত্তা শঙ্কায় সহকারি শিক্ষক স্বপনের ফোনে আমি ওই মিটিং এ উপস্থিত হয়নি। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কথা না বলে ফোন কেটে বন্ধ করে দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তসলিমা জাহান।
শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য –
তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জাকারিয়া হায়দার বলেন, তদন্ত বিদ্যালয় বন্ধ ও খোলার দিন হতেই পারে। সংবাদে উঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও শিক্ষকরা একজন শিক্ষার্থী নাকি সকল শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ আচরণ করেন। গোপনে লাইব্রেরী কক্ষে কোচিং সেন্টারে পড়ুয়া সাত শিক্ষার্থীর সম্প্রতি প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগের তদন্তে অভিভাবকদের উপস্থিত করা হয়েছিল। প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নেয়া ও উনার পরামর্শে মূল ফটকে তালা দেয়াসহ সহকারি শিক্ষক, গোপনে পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবক আর উপস্থিতি অভিভাবকদের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি। তারপর একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিন।