দেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ধর্ষণ বেড়েছে ৬৮.৪৯ শতাংশ এবং শিশুদের প্রতি সহিংসতা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৯২ জন নারী ও শিশু। গত বছরের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৯২ জন। অপরদিকে একই সময়ে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪০ জনে, যা গত বছরের তুলনায় ৩৮.২২ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্যে উঠে এসেছে, গত বছরের জানুয়ারি-জুলাই সময়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ২৫৩ জন নারী ও শিশু, আর চলতি বছরে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০৫ জনে। এ সময়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১৭ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৫ জনকে, এবং আত্মহনন করেছেন ৫ জন।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিবেদনে আরো ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫০২ জন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৩৩ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২৭ জনকে, এবং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ২০৯ জনের উপর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব, আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্বল ভূমিকাই সহিংসতা বৃদ্ধির মূল কারণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ মন্তব্য করেন, “জুলাই আন্দোলনের পর নারীদের স্বাধীনতা ও অধিকার নিয়ে নেতিবাচক বয়ান তৈরি হয়েছে, যা অপরাধীদের আরও উৎসাহিত করেছে।”