বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ৪০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ পরিশোধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ঋণের আসল ও সুদ মিলিয়ে মোট ৪০৯ কোটি ডলার শোধ করা হয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে রেকর্ড।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩৩৭ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ হয়েছিল। ২০১২-১৩ অর্থবছরে যেখানে বিদেশি ঋণ পরিশোধ ছিল মাত্র ১১০ কোটি ডলার, সেখানে এক দশক পর এসে তা বেড়ে চার গুণের বেশি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীত সরকারগুলো বহু অপ্রয়োজনীয় খাতে বিদেশি ঋণ নিয়েছিল, যেগুলোর বেশ কিছু প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এর ফলে ঋণ পরিশোধের চাপ এখন সামষ্টিক অর্থনীতির ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে।
অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতা প্রকট। বিদেশি ঋণ পরিশোধের ক্রমবর্ধমান বোঝা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে চাপে ফেলছে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষাকে কঠিন করে তুলছে।
আগামী বছর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। এ অবস্থায় বৈদেশিক ঋণের সুদহার আরও বাড়বে। যদিও ২০২৬ সালের পরও চার বছর এলডিসি সুবিধা বহাল থাকবে, তারপরও নতুন সরকারকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসা নতুন সরকারের জন্য বিদেশি ঋণ পরিশোধ অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। একই সঙ্গে রিজার্ভ ধরে রাখা ও সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্য বজায় রাখাও হবে বড় পরীক্ষা।