নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল খবরবাংলা২৪ ডটকম।
তারই ধারাবাহিকতায় হাসপাতালের ডাক্তারা আউটডোরে নিয়ম মাফিক রোগী না দেখার অভিযোগ আসে খবরবাংলা২৪ ডটকমের কাছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করতে বুধবার (০২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালে যান খবরবাংলা২৪ ডটকমের সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি, ডেইলি আওয়ার টাইম এবং দৈনিক গণমুক্তি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি অলক কুমার দাস।
এসময় হাসপাতালের আউটডোরের বিভিন্ন চেম্বারে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ শেষে তত্ত্বাবধায়ক ডা. সদর উদ্দিনের বক্তব্যের জন্য তার সাথে সাক্ষাত করেন।
পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি তত্ত্বাবধায়ক ডা. সদর উদ্দিনের বক্তব্য নেয়ার প্রাক্কালে সেখানে প্রবেশ করেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম সজিব।
ঘটনার শুরু –
আরএমও ডা. শফিকুল ইসলাম সজিব রুমে প্রবেশ করেই তিনি সাংবাদিক অলক কুমারের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেন।
পরে মোবাইলটি একটি টেবিলের উপরে ছুঁড়ে মারেন ও সাংবাদিকের উপর উত্তেজিত হন এবং ধমকাতে থাকেন।
সেসময় আরএমও সজিব হাসপাতালের আউটডোরে রোগী কর্তব্যরত সকল ডাক্তারদের রোগী দেখা বন্ধ করে দেন।
পরে তিনি সকল ডাক্তারদের কনফারেন্স রুমে ডেকে আনেন।
এসময় সেখানে উপস্থিত হন হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডা. শহিদুল্লাহ কায়সার।
ডা. শহিদুল্লাহ কায়সার সাংবাদিককে বলেন, কে আপনাকে পাঠিয়েছে, কত টাকা খেয়ে হাসপাতালের বিরুদ্ধে সংবাদ করতে আসছেন? আপনার তো সাহস কম না, আপনি হাসপাতালের বিরুদ্ধে সংবাদ করতে আসছেন।
এসময় তিনি সাংবাদিকের পরিচয় পত্রে (ভিজিটিং কার্ডে) শিক্ষাগত যোগ্যতা লেখা নাই কেন? সেই বিষয়টি নিয়েও উপহাস করতে থাকেন।
এসময় ডা. শহিদুল্লাহ কায়সার আরো বলেন, ডিসি-এসপি অফিসেও দুর্নীতি হয়, আপনি সেখানে যান তো, দেখি পারেন কিনা? তাদের নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করেন, দেখি আপনি কতবড় সাংবাদিক।
তিনি সাংবাদিক অলককে বিভিন্ন রকম অপমানসূচক কথা বলতে থাকেন।
পরে হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা বেশ কয়েকজন ডাক্তারের অনিয়ম ও অনুপস্থিতির তথ্য প্রমাণাদি মুছে ফেলে কর্তৃপক্ষের নিকট দুঃখপ্রকাশ করলে তাকে মুক্তি দেন হাসপাতালের আরএমও এবং ডা. শহিদুল্লাহ কায়সার।
বের হওয়ার মুখে সেখানে উপস্থিত হন হাসপাতালের আউটসোর্সিং ঠিকাদার হামিদুর রহমান খান তুহিন।
হামিদুর রহমান খান তুহিন হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায় ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন যাবত এককভাবে আউটসোর্সিং এর কাজ করে যাচ্ছেন।
ঘটনার প্রেক্ষিতে তুহিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খুশি রাখতে সাংবাদিক অলকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখা ও তার সাথে খারাপ আচরণ করার বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের আরএমও ডা. মো. শফিকুল ইসলাম সজিব সম্পূর্ণ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টা ওই রকম না, আসলে দাদার সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল।
কিন্তু তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত সংবাদের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে আসেন।
সেই বিষয়টি নিয়ে উনার সাথে কথা হয়। আপনারা একসময় এসে চা খেয়ে যাবেন।
ভূক্তভোগী সাংবাদিকের বক্তব্য –
ভূক্তভোগী সাংবাদিক অলক কুমার বলেন, হাসপাতাল নিয়ে কোন সংবাদ করা যাবে না। এটাই তাদের সব কথার আসল কথা।
তবে ঘাত-প্রতিঘাত যতই আসুক, টাঙ্গাইলের ৪০ লক্ষ মানুষের জীবনের সবচেয়ে কঠিনতম মূহুর্তের শেষ আশ্রয়স্থল এই হাসপাতালকে দুর্নীতি মুক্ত করতে আমার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে।