বাংলাদেশে সংক্রমণজনিত রোগগুলোর মধ্যে টাইফয়েড অন্যতম। স্যালমোনেলা টাইফি নামের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট এই রোগ সাধারণত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। জনস্বাস্থ্যের জন্য এটি দীর্ঘদিন ধরেই একটি বড় হুমকি।
টাইফয়েড প্রতিরোধে টিসিভি (Typhoid Conjugate Vaccine) একটি অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ টিকা হিসেবে বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই টিকা শিশুদের টাইফয়েড সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয় এবং রোগের বিস্তার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে—বিশেষ করে পাকিস্তান, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে—এই টিকা সফলভাবে প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও বর্তমানে ব্যবহৃত টিসিভি টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কর্তৃক যাচাইকৃত (প্রিকোয়ালিফাইড), যা এর মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকা গ্রহণের পর খুবই সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে—যেমন টিকা দেওয়ার স্থানে হালকা লালচে ভাব, ব্যথা বা ফুলে যাওয়া, অল্প জ্বর, মাথাব্যথা, ক্লান্তি বা মাংসপেশিতে ব্যথা। এসব সাধারণত এক-দুই দিনের মধ্যেই সেরে যায় এবং কোনো গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করে না।
চলমান টিকাদান ক্যাম্পেইন-এর আওতায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি বা সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ে টিসিভি টিকা দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া বিদ্যালয়ের বাইরে থাকা ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য দেশের বিভিন্ন ইপিআই (EPI) স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে এই টিকা প্রদান করা হচ্ছে, যাতে সব শিশু সমানভাবে এই সুরক্ষা পায়।
টাইফয়েড প্রতিরোধে টিসিভি টিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও সময়মতো টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করা এখন সরকারের অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।