বিশ্বজুড়ে আলোচিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই তাদের জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি-তে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কনটেন্ট চালু করতে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান মঙ্গলবার এক্স-এ (Twitter) পোস্টে জানান, “সামনের সংস্করণগুলোতে চ্যাটজিপিটি আরও মানবসদৃশ আচরণ করতে পারবে—তবে কেবল তখনই, যখন ব্যবহারকারীরা নিজেই তা চাইবেন।”
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপটি ইলন মাস্কের এক্সএআই প্ল্যাটফর্ম গ্রোক-এর সাম্প্রতিক যৌনবিষয়ক চ্যাটবট চালুর অনুকরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, নতুন কনটেন্ট প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করে ওপেনএআইকে আরও বেশি পেইড সাবস্ক্রাইবার আনতে সাহায্য করবে।
চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে এক কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার পর এই ঘোষণাটি এসেছে। ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইন আত্মহত্যা করার আগে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে তার মানসিক কষ্ট ভাগাভাগি করেছিলেন। তার পরিবার অভিযোগ করেন, চ্যাটজিপিটির প্যারেন্টাল কন্ট্রোল যথেষ্ট কার্যকর ছিল না।
অল্টম্যান জানিয়েছেন, “আগেই চ্যাটজিপিটি সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল যাতে মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো যায়। এখন প্রযুক্তি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা ঝুঁকি হ্রাস করে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাকে আরও নিরাপদ ও বাস্তবমুখী করবে।”
ডিসেম্বর থেকে যাচাইকৃত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীদের জন্য ইরোটিক (যৌন) কনটেন্টের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে কনটেন্ট ফিল্টার ও বয়স যাচাই প্রক্রিয়া কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আইনজীবী জেনি কিম বলেন, “ওপেনএআই কীভাবে নিশ্চিত করবে যে শিশু এসব কনটেন্টে প্রবেশ করতে পারবে না? বয়স যাচাই ব্যবস্থা কার্যকর হবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।”
এর আগে এপ্রিল মাসে কিছু অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট থেকেও গ্রাফিক ইরোটিকা তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল। ওপেনএআই তখন জানিয়েছিল, দ্রুত সেই সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (FTC) ইতিমধ্যে শিশুদের এআই চ্যাটবটের প্রভাব নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। টিউলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রব লালকা বলেন, “ওপেনএআই দ্রুত ব্যবহারকারী অর্জন করেছে। বাজারে টিকে থাকার জন্য তাদের নতুন পথ খুঁজতে হবে। তবে এখনো প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হয়নি।”