বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’। শুক্রবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশের প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারে—জুলাই সনদ তার বড় উদাহরণ।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, যারা এখনো স্বাক্ষর করেননি, আলোচনার মাধ্যমে তারাও এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) স্বাক্ষর না করাকে তিনি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে আলোচনার সময় তারা প্রায় সব বিষয়ে ইতিবাচক ছিল। যে বিষয়গুলো নিয়ে মতপার্থক্য, তা পরবর্তী আলোচনায় সমাধান করা যেত। আমি মনে করি, এটি তাদের বিচক্ষণতার ঘাটতি। তবে এটাকে বিভক্তি মনে করছি না।”
তিনি আরও বলেন, “তারা বুঝতে পারবে এবং সঠিক সিদ্ধান্তে ফিরে আসবে।” বিতর্কের জায়গা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কোনো দেশেই সব কিছুতে বিতর্ক শেষ হয় না। আমাদের সমাজেও বিতর্কের প্রবণতা বেশি।”
জুলাই সনদ স্বাক্ষরকে তিনি ‘গ্রেট অ্যাচিভমেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং জানান, এর বাস্তবায়ন নিয়ে সামনে আরও আলোচনা হবে।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আজকের দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শহীদদের রক্তদান, আত্মত্যাগ ও জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন আজকের এই সনদ।”
তিনি বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তুলতে পারব। এখান থেকেই নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। রাষ্ট্রের সব অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে।”
সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে ৩০০ আসনে নির্বাচন করার বিষয়টি স্পষ্ট বলা আছে। তবুও প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসতে বিএনপি প্রস্তুত।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠান নিয়ে মির্জা আব্বাসের মন্তব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এনসিপিসহ কয়েকটি দলের অনুপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই অনুষ্ঠানে বিঘ্ন সৃষ্টির চেষ্টা। তিনি বলেন, “কিছু দল সব সময়ই এমন আচরণ করে। শেষ মুহূর্তে অনুপস্থিত থাকা ডিস্টার্বেরই অংশ।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।