বাংলাদেশে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য কমে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে চাকরির সুযোগ সীমিত হওয়ার সংকট। উচ্চশিক্ষিত তরুণরাও কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাচ্ছেন না। মূলত তৈরি পোশাক এবং রেমিট্যান্স খাতই দেশের বৃহৎ কর্মসংস্থানের উৎস। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই দুই খাতেও পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়; বরং সংকট আরও প্রকট।
উদ্যোক্তারা মনে করছেন, অনিশ্চয়তা দূর করে উৎপাদন ব্যবস্থায় গতি ফিরিয়ে আনাই সময়ের দাবি। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা অপরিহার্য।
দেশের তৈরি পোশাক খাতকে বলা যায় অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভরশীল এই খাতটি বর্তমানে সংকুচিত হয়ে এসেছে। এক বছরে শতাধিক কারখানা বন্ধ হয়েছে, ফলে লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। নতুন খোলা কারখানাগুলোতেও পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, “১০০টি কারখানা বন্ধের বিপরীতে নতুন করে চালু হচ্ছে মাত্র ৩০টি। ফলে বন্ধ হওয়া শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।”
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত দুইটি খাতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে—তৈরি পোশাক ও রেমিট্যান্স। এই দুই খাতের বড় উপাদান হলো সস্তা শ্রম। নতুন প্রবৃদ্ধির চালক খুঁজে বের করে দ্রুত কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে যথাযথ সাফল্য নেই। “উদ্যোগ থাকলেও কর্মসংস্থান কম হচ্ছে। বস্ত্র খাত এবং জনশক্তি—এই দুই ক্ষেত্রের ওপর নির্ভরতা থাকায় সংকট আরও বাড়ছে। বেকারত্ব কমানো কোনো স্বল্পমেয়াদী প্রকল্পের মাধ্যমে সম্ভব নয়; এটি সার্বিক অর্থনৈতিক নীতির অংশ।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমে যাওয়ায় বিনিয়োগও সীমিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার থমকে আছে। উৎপাদন না বাড়ালে বেকারত্ব এবং সামাজিক অস্থিরতা আরও বাড়বে।











