বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে টাঙ্গাইলে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকেই টাঙ্গাইলের সন্তোষে ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। ফুলে ঢেকে যায় মজলুম জননেতার সমাধিস্থল। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মানুষ স্মরণ করে মহান এই নেতাকে। তার ভক্ত-অনুরাগীদের কণ্ঠে ‘যুগ যুগ জিও তুমি মওলানা ভাসানী’ স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো এলাকা।
সকাল সাড়ে ৭টায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ পুস্পস্তবক অর্পণ ও মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর ভাসানী পরিবার, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাব, ন্যাপ ভাসানী, ভাসানী পরিষদসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল ৮টায় তবারক বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারা মজলুম জননেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
মওলানা ভাসানী ছিলেন অধিকারবঞ্চিত ও শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আজীবন সংগ্রামী নেতা। তিনি জাতীয় সংকটে জনগণকে সংগঠিত করে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ব্যক্তিজীবনে নিরহংকারী, সাদাসিধে ও জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া এই নেতার সাধারণ জীবনযাপন তার দেশপ্রেমের পরিচয় বহন করে।
শোষণমুক্ত, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে তিনি দীর্ঘ সংগ্রাম করে গেছেন। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তিনি ছিলেন আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। লাইন প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারবিরোধী আন্দোলন, ১৯৫৭ সালের ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন এবং স্বাধীনতার পর ফারাক্কা লং মার্চ তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের সয়াধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণকারী ভাসানী ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তাকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।











