টাঙ্গাইল পৌরসভা আধুনিক হলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ঘাটতি এবং ময়লা–আবর্জনার দুর্গন্ধ এখন শহরবাসীর নিত্যসঙ্গী। ১৩৮ বছরের পুরোনো এই পৌরসভায় আজও গড়ে ওঠেনি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। শহরে প্রবেশের তিনটি পথেই রাস্তার পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা–আবর্জনা, যার তীব্র দুর্গন্ধ নাক চেপে শহরে ঢোকতে বাধ্য করছে মানুষকে।
পৌর শহরের বেবিস্ট্যান্ড এলাকা এবং টাঙ্গাইল–ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের রাবনা বাইপাসের পাশেই দীর্ঘদিন ধরে ফেলা হচ্ছে শহরের সব বর্জ্য। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন উপজেলার মানুষসহ হাজারো যাত্রী চলাচল করেন। ময়লার ভাগারের পাশেই রয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, যেখানে দুর্গন্ধে বসবাসই কঠিন হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুবার জানানো হলেও পৌরসভা কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ১৮৮৭ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত ২৯.৪৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের টাঙ্গাইল পৌরসভায় বসবাস করেন প্রায় তিন লাখ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে নির্দিষ্ট বর্জ্য ভাগাড় না থাকায় শহরের প্রবেশমুখ তিনটি সড়কের পাশেই ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। মৃত প্রাণী থেকে শুরু করে গৃহস্থালি বর্জ্য—সব ধরনের ময়লাতেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। মাঝেমধ্যে বর্জ্যের ভাগাড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে স্থানীয়রা আরও ভোগান্তিতে পড়েন।
শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন—এই দুর্গন্ধে শিশু-বৃদ্ধদের অসুস্থতা বাড়ছে, ভাড়াটিয়ারা বাসা ছাড়ছেন, এমনকি পথচারীরাও কয়েক মিনিট দাঁড়াতে পারছেন না।
পরিবেশবিদ সোমনাথ লাহিরী জানান, খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলা পরিবেশ আইনের লঙ্ঘন। এতে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়, যা মানুষের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ বিষয়ে বহুবার নোটিশ পাঠালেও পৌরসভা সাড়া দেয়নি।
এদিকে পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জেলা প্রশাসকের কাছে বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নতুন জায়গা পেলে রি-সাইক্লিং ব্যবস্থা শুরু করে শহরের পরিবেশ উন্নত করা হবে।










