ছোট-বড় সবার শরীরেই বিভিন্ন ধরনের কৃমি সংক্রমণ ঘটাতে পারে। বিশেষ করে থ্রেডওয়ার্ম, রাউন্ডওয়ার্ম, হুইপওয়ার্ম, টেপওয়ার্ম ও হুকওয়ার্ম সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। পিনওয়ার্ম বা থ্রেডওয়ার্মের মতো কৃমির ডিম এতই ক্ষুদ্র যে খালি চোখে দেখা যায় না এবং বাতাসের মাধ্যমেও ছড়িয়ে যেতে পারে।
২০১৫ সালে পিএলওএস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, কৃমিনাশক ওষুধ ব্যবহারের পরও শিশুদের শরীরে কৃমি বারবার ফিরে আসে। কারণ তাদের আশপাশের প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরেও কৃমি রয়ে যায়, যা আবার নতুন সংক্রমণ ঘটায়।
২০১৩ সালে ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল হেলথের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়—বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হুকওয়ার্ম সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ে। অর্থাৎ কৃমি শুধু শিশুদের সমস্যা নয়, প্রাপ্তবয়স্করাও সমানভাবে আক্রান্ত হন।
বিশেষজ্ঞরা জানান, কৃমি শরীরে প্রবেশ করে যকৃত ও ফুসফুসে সিস্ট তৈরি করতে পারে। ফুসফুসে পৌঁছালে নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে এবং মস্তিষ্কে পৌঁছালে গুরুতর স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
যদিও কৃমি প্রতিরোধে ওষুধ ব্যবহৃত হয়, কিছু ঘরোয়া খাবারও সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে গাজর, লবঙ্গ, অ্যাপল সিডার ভিনেগার, হলুদ, নারকেল ও আনারস। এসব খাবারে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
কৃমি সাধারণত দূষিত খাবার, পানি, মাটি, অপরিষ্কার হাত, ধোয়া ছাড়া সবজি, অপরিশোধিত পানি, সংক্রমিত মল-মূত্র বা পোষা প্রাণীর মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এরপর তা অন্ত্রে ডিম পাড়ে এবং শরীরের ক্ষতি করে।
কৃমির কারণে রক্তাল্পতা, ক্ষুধামন্দা, ওজন কমে যাওয়া, পেটব্যথা, হজমের সমস্যা, অ্যালার্জি ও বমির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি শারীরিক বৃদ্ধি, মানসিক বিকাশ ও পড়াশোনার কর্মক্ষমতাও কমিয়ে দিতে পারে।











