নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রায় ৩০ মাস নিরাপদ হেফাজতে থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলা সুস্থ হয়ে আবার ফিরে আসেন কারাগারে।
ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত; পাশে দাঁড়ালেন টাঙ্গাইলের জেল সুপার আব্দুল্লা আল মামুন।
এই জেল সুপার নিজ উদ্যোগে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিলেন ওই মহিলাকে। এক মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের এই জেল সুপার।
এই উদ্যোগে তিনি শুধু কারাগারের বন্দীদের কাছেই নয়; বাইরের মানুষের কাছেও একজন মহান মানুষ হয়ে গেছেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের দেওহাটা বাজারের রাস্তার পাশে রাত আনুমানিক ১১টার দিকে প্রায় ৪০ বছর বয়সী অপ্রকৃতস্থ এক নারী একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন।
অসুস্থ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ও বেসরকারী একটি টেলিভিশনের স্থানীয় প্রতিবেদক ওই নারীকে কুমুদিনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
এব্যাপারে অজ্ঞাতনামা, অপ্রকৃতস্থ মহিলাকে নিরাপদে হেফাজতে রাখার জন্য মির্জাপুর থানা কর্তৃপক্ষ বাদি হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন এবং আদালতের স্মরণাপন্ন হন।
এমতাবস্থায় জরুরী মানসিক ও শারীরিক পরীক্ষার প্রয়োজন হলে একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করে মির্জাপুর কুমুদিনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পরবর্তীতে আদালত ২০১৮ সালের ২৫ জুনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জনকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
একই সাথে অপ্রকৃতস্থ ওই নারীকে নিরাপদ হেফাজতে রাখার জন্য গাজীপুরের পূবাইলে অবস্থিত সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রে (বালিকা) প্রেরণের জন্য টাঙ্গাইল জেলা কারাগার সুপারকে নির্দেশ দেন।
এছাড়াও ওই মহিলার আত্মীয়-স্বজন খুঁজে বেরার নির্দেশ দেন মির্জাপুর থানা পুলিশকে।
এই অবস্থায় দীর্ঘ দিন নিরাপদ হেফাজতে থাকার পর ওই নারী সুস্থ হয়ে উঠলে; গত ৪ ডিসেম্বর তাকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে আনা হয়।
কারাগারে ফিরে ওই মহিলা তার নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর জানান কর্তৃপক্ষকে।
এরপর জেল সুপার আব্দুল্লা আল মামুন ওই মহিলাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে শুরু করেন আইনি প্রক্রিয়া।
সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ১৪ ডিসেম্বর মহিলাকে ফিরিয়ে দেন তার পরিবার।
“রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ” ব্রতে দিক্ষিত জেল সুপার একটি অসহায় নারীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে তার জীবনটাকে করেছে নিরাপদ; যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সম্পাদনা – অলক কুমার